Logo
Logo
×

অনুসন্ধান

সুশীল সমাজকে আকৃষ্ট করতে বামপন্থী, মুক্তিযুদ্ধকে কাজে লাগাত আওয়ামী লীগ

মুক্তাদির রশীদ

মুক্তাদির রশীদ

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:২০ পিএম

সুশীল সমাজকে আকৃষ্ট করতে বামপন্থী, মুক্তিযুদ্ধকে কাজে লাগাত আওয়ামী লীগ

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে অবস্থান নেওয়া তৎকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামীর ধানমন্ডির বাড়ি সুধা সদনে গত ৬ ফেব্রুয়ারিতে "ছাত্র-জনতা" ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। গতকাল পর্যন্ত সে বাড়ি ভেঙে ব্যবহার যোগ্য লোহা বা ইট নিয়ে যাওয়া দেখা যায় । 

সেখানে বাংলা আউটলুক-এর এ প্রতিনিধি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং কিছুটা আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত নথিপত্র দেখতে পেয়েছেন।  যার মধ্যে আওয়ামী লীগের অন্য রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি নিয়ে  নিজস্ব বিশ্লেষণ রয়েছে।  


শেখ হাসিনার স্বামী ও খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া ( সুধা মিয়া) এর নামে সুধা সদন এক সময় রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ বাড়িতে পরিণত হয়। ২০০৯ এ আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের আগ পর্যন্ত শেষ হাসিনা সুধা সদনে থাকতেন। 

চারতলা ভবনটি ঢাকা শহরের ধানমন্ডি লেকের ধারে অবস্থিত৷ মূলত এটি শেখ হাসিনার বাড়ি হিসেবে ব্যবহার হতো তবে তিনি গণভবনের রাজসিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করে, পালিয়ে যাবার আগ পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করছিলেন।

সেখানে প্রাপ্ত নথিতে কোনো তারিখ পাওয়া যায়নি৷ তবে এতকুটু অনুমান করা যায় এটি কোন নির্বাচনের আগে করা যখন আরেক স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জীবিত ছিলেন। 

 ১৪ জুলাই ২০১৯ তারিখে এরশাদ মৃত্যু বরন করেন। তবে ধারণা করা যায় এটা ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের আগের রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে তৈরি করা নথি৷ 

সুদা সদনে পাওয়া আওয়ামী লীগের নথি বলছে, "ভোটের বাস্তবতায় জাতীয় পাটির অবস্থান এখনও বাংলাদেশে তৃতীয়। সাম্প্রতিক সময়ে জমায়েতের ভোট বৃদ্ধি হলেও তা এখনও এরশাদকে হারিয়ে যাওয়ার অবস্থায় উন্নীত হয়নি। আগামী নির্বাচনে জোটের ভাঙন ধরাতে না পারলে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের জাতীয় পার্টির সমর্থন লাগবে-এ বাস্তবতা মেনে নিয়েই আওয়ামী লীগের নীতি প্রণয়ন ও গ্রহণ করতে হবে। জেলের ভয়ে এই দুরর্তে হয়তঃ এরশাদ প্রকাশ্যে জোটে আসতে রাজী হবে না। তবে ইস্যুভিত্তিক ঐক্যে তাঁকে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। নির্বাচনী ঐক্যের জন্য মাননীয় নেত্রীর সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে কিছু ছাড় দিয়ে হলেও ভবিষ্যতে যাতে এরশাদ আওয়ামী লীগের সাথে নির্বাচনী জোটে থাকে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।"


১১ দল নিয়ে আওয়ামী লীগের মূল্যায়ন করছে যা বর্তমান সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ নথি বলছে, 

"১১ দলের শরিক ওয়ার্কাস পার্টি যে জায়গায় এসেছে-অন্যদের অন্তত। সে জায়গায় আনা প্রয়োজন। এই মুহূর্তে তাদের সাথে জোট গঠন করতে পারলেই ভার। কেননা বাংলাদেশের রাজনীতিতে জোটের বিরুদ্ধে জোট একটি মনস্তাত্বিক হয়ে দাড়িয়েছে। বাম দল এগুলোর সাথে জোট হলে এ প্রশ্নের কিছুটা সমাধান হয়। ভোটের বাস্তবতায় এই জোট খুব বেশী কাজে না লাগলেও সুশীল সমাজের কাছে এদের অবস্থান সর্বোপরি সবাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এ মূল্যবোধের কথা বলে যা আওয়ামী লীগের শক্তি কিছুটা হলেও বৃদ্ধি করবে। তবে তাদের কর্মকাণ্ড যেন এমন না হয় যা মার্কিনিদের ক্ষেপিয়ে তুলতে পারে। ড. কামাল হোসেনের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলা প্রয়োজন। কেননা তাঁর আন্তর্জাতিক যোগাযোগসহ অধ্যাপক বি. চৌধুরী ও জনাব কাদের সিদ্দিকীর সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় সহায়ক হবে। উপরন্তু তিনি জাতীয় ঐক্য মঞ্চের ব্যানারে সবার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।"

কৃষক শ্রমিক জনতালীগ নিয়ে আওয়ামী লীগ বলছে, "জোট গঠন করা যেতে পারে। এমনকি তাঁকে দলে আনা সম্ভব হলে তাও করা যেতে পারে। কেননা জনাব তাদের সিদ্দিকী, সাথে থাকলে টাঙ্গাইল সহ বৃহওর ময়মনসিংহে ভোটের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ বাড়তি সুবিধা পাবে।" 


বিকল্প ধারা নিয়ে নথিটি লিখেছে, 

বিকল্প ধারার দলীয় অবস্থান যাই থাকুক, সাবেক রাষ্ট্রপতি বি. চৌধুরীর অবস্থান ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগের কারণে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তার একটা গুরুত্ব রয়েছে। এ দলের সাথে ইস্যুভিত্তিক ঐক্য গড়া প্রয়োজন।

জাসদ: 

জাসদ (ইনু) ঐক্য প্রক্রিয়ায় সক্রিয় যা সঠিক। সম্ভব হলে জাসদ (রব) কে আনা প্রয়োজন। 

জেপি: 

জেপির সাথে জোট বা ইস্যুভিত্তিক ঐক্য দুটোই করা যেতে পারে। তবে লক্ষ্য হবে তাদের সাথে ঐক্য এরশাদকে যেন বাধাগ্রস্ত না করে।

সেখানে "মন্তব্য" হিসেবে লেখা হয়েছে, 

বৃহওর এই ঐক্য প্রক্রিয়ায় অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে কারা যোগাযোগ রাখবেন- তাঁদের একটি টিম গঠন করা প্রয়োজন।-

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: banglaoutlook@gmail.com

অনুসরণ করুন