চিন্ময় কৃষ্ণকে ইসকনের শিশু সুরক্ষা অফিস সাময়িক বরখাস্ত করেছিল
গত কয়েক দিন ধরে দেশের বহুল আলোচিত ব্যক্তি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। তাকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ইসকনের আন্তর্জাতিক শিশু সুরক্ষা অফিস (সিপিটি) সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
যুক্তরাজ্য ইসকনের সিপিটি কর্তৃপক্ষ তাদের চিঠিতে বিশদভাবে উল্লেখ করেছে, গত বছর ৬ অক্টোবর স্থগিতাদেশ কার্যকর করা হয়।
বাংলা আউটলুক চিঠিটি পেয়েছে, যা থেকে স্থগিতাদেশ কার্যকর থাকার বিষয়টি নিশ্চিত নিশ্চিত হওয়া গেছে।
চিঠিটির সত্যতা একটি স্বনামধন্য ফ্যাক্ট-চেকার মাধ্যমে স্বাধীনভাবে যাচাই করা হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস (আইনি নাম চন্দন ধর), চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরিক ধামের অধ্যক্ষ। তাকে ইসকনের সিপিটি বরখাস্ত করেছে।
সিপিটি ডিরেক্টর কমলেশ কৃষ্ণ দাসের সই করা চিঠিতে বলা হয়েছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ইসকনের কোনো কাজে নেতৃত্বের ভূমিকায় রাখা যাবে না। তিনি কীর্তনের নেতৃত্ব দিতে পারবেন না। ক্লাস পরিচালনা করতে পারবেন না এমনকি শ্রীলা প্রভুপাদের উপাসনা অনুষ্ঠানেও অংশ নিতে পারবেন না এবং ১৮ বছরের কম বয়সীদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন না।
বাংলাদেশ ইসকনের কোর কমিটি বা সিপিটি কর্মকর্তারা অনুমোদন না দিলে তাকে ইসকনের সম্পত্তিতে রাতে থাকতেও নিষেধ করা হয়েছে।
চিঠিটি পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে কার্যকর করার বাধ্যবাধকতা ছিল।
বাংলা আউটলুক চিঠিটির সত্যতা যাচাই করার জন্য কমলেশ কৃষ্ণ দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তিনি টেক্সট বার্তার মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন, “আমরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। এই অভিযোগগুলির উপর কাজ করেছি এবং আমাদের আন্তর্জাতিক নীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমরা একটি অস্থায়ী স্থগিতাদেশ জারি করেছি।”
তিনি বলেন, “সাসপেনশন সংক্রান্ত চিঠিটি আসল। অভিযোগের প্রকৃতির কারণে তদন্তের সুবিধার্থে স্থগিতাদেশ জরুরি ছিল। যাইহোক, কিছু চ্যালেঞ্জের কারণে অগ্রগতি বিলম্বিত হয়েছে।”
কমলেশ কৃষ্ণ দাস আরও অনুসন্ধানের জন্য ইসকন বাংলাদেশের আধিকারিক ঋষিকেশ কৃষ্ণ দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ এবং বাংলাদেশ ইউনাইটেড মাইনরিটি অ্যালায়েন্স—দুটি প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি বাংলাদেশ ইউনাইটেড সনাতন জাগরণ জোটের ব্যানারে একত্রিত হয়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে এই নতুন জোটের মুখপাত্র হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যারা ইতিমধ্যেই আট দফা দাবিতে চট্টগ্রাম ও রংপুরে সমাবেশ করেছে।
গত ২৫ নভেম্বর বিকেলে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে চট্টগ্রাম যাওয়ার সময় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পুলিশ।
পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রাম মহানগর-৬-এর কাজী শরিফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গ্রেফতারের পর ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক গণমাধ্যমকে বলেন, একটি অভিযোগ পেয়ে রিকুইজিশনের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গত ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ চট্টগ্রামে সমাবেশ করার পর ৩১ অক্টোবর বিএনপি নেতা ফিরোজ খান চিন্ময়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, চিন্ময়কৃষ্ণ দাস সমাবেশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছেন। উল্লেখ্য, পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।