তারিক আহমেদ সিদ্দিকের ক্যাশিয়ারের খোঁজ মিলেছে
পদত্যাগ করে পালিয়ে ভারতে যাওয়া শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকের ক্যাশিয়ারের খোঁজ পাওয়া গেছে। ১০ বছর ধরে তিনি মালয়েশিয়াতে বসবাস করছেন। সেখানে তিনি তদারকি করছেন তারিক আহমেদ সিদ্দিকের জনশক্তি, আবাসন ও কনস্ট্রাকশন ব্যবসা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ লং কোর্সের এই কর্মকর্তার নাম মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) শরিফ।
সূত্রে জানা গেছে, ইসিবি কর্তৃক মিরপুর ডিওএইচএসে বালু ভরাটের সময় থেকেই শরিফের সাথে তারিকের সম্পর্ক দৃঢ় হতে শুরু। সে সময় ডিওএইচএস এলাকায় বেশ কয়েকটি প্লট শরিফ জবরদখল করে নেন। পরবর্তীতে মিরপুর ডিএএইচএস সীমানা সংলগ্ন এলাকায় দুটি বাড়িও নির্মাণ করেন শরিফ।
ঢাকা স্টেশন সদর দপ্তরে কর্মরত অবস্থায় তারিকের স্ত্রীর পরিচালিত প্রচ্ছায়া নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে জমি দখলে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন এই শরিফ। এছাড়া বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মইনুল রোডের বাসা থেকে উচ্ছেদে মেজর শরিফ ব্যক্তিগতভাবে জড়িত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি দ্রুততার সাথে সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অব্যাহতি গ্রহণ করে মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোম স্কিমে সপরিবারে থিতু হন।
বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, এই সকল প্রক্রিয়ায় তারিক আহমেদ সিদ্দিক তাকে সহায়তা করেছেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বেশ কয়েকটি আইপিও মূল্য ম্যানিপুলেশন ও বিভিন্ন ব্যবসায়ী গ্রুপের সাথে তারিক সিদ্দিকের হয়ে কমিশন নেগোসিয়েশন করতেন শরিফ। সেসব অর্থ মালয়েশিয়ার মে ব্যাংক এবং এএম ব্যাংকে জমা করতেন শরিফ। মালয়েশিয়াতে সেকেন্ড হোম থাকা সত্ত্বেও মেজর শরিফ নিজ ও পরিবারের সকল সদস্যের জন্যে লাখ লাখ ডলার খরচ করে ক্যারিবিয়ান দ্বীপ রাষ্ট্র অ্যান্টিগুয়া ও বার্বুডার পাসপোর্ট কেনেন। সম্প্রতি তিনি কুয়ালালামপুর সংলগ্ন অভিজাত এলাকা 'Titiwangsa' তে কয়েক মিলিয়ন রিংগিট ব্যয়ে একটি বাড়ি কিনেছেন। এছাড়া তার আরেকটি বাড়ি রয়েছে 'Damaisiri' নামের একটি প্রকল্পে, যা 'Wangsa Melawati' তে অবস্থিত।
এছাড়া শরিফের মাধ্যমে বরখাস্ত সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করেন তারিক আহমেদ সিদ্দিক। জিয়াউল আহসানের হয়ে একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন তার বন্ধু লে. কর্নেল আসাদুল ইসলাম, পিএসসি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, জলশিরি প্রকল্পে কমপক্ষে হলেও ৫০টির মতো নির্মাণ কাজের সাথে জড়িত রয়েছে শরিফ-আসাদের প্রতিষ্ঠান। লে. কর্নেল আসাদের মাধ্যমে পরিচালিত এই নির্মাণ ব্যবসায় বিনিয়োগ রয়েছে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এর অর্ধেক তারিক আহমেদ সিদ্দিকের ও অর্ধেক জিয়াউল আহসানের।
অতি সম্প্রতি তারিক আহমেদ সিদ্দিক গ্রীসের আর্নেস শহরে সাক্রামেনতো নামের ভবনে কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্টে বিনিয়োগ করেছেন। এর জন্য শরিফ নিজে গ্রীসে যান এবং সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।
জানা যায়, এই ভবনে বিনিয়োগের মাধ্যমে গ্রীসে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমিত পাওয়া সম্ভব।