দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সেলিম মাহমুদ
দুদকে অভিযোগ, দেশ ছাড়তে পারেন ১০ সেপ্টেম্বর
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সেলিম মাহমুদ চৌধুরী
আওয়ামী লীগের সরকারের এমপি ও মন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারের জামাই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সেলিম মাহমুদ চৌধুরী দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে দেশ-বিদেশে কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ এবং পাচারের অভিযোগ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া সেলিম সেনাবাহিনীতে থাকাকালীন পরিচয় গোপন করে ২ লাখ মার্কিন ডলারে অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডায় নাগরিকত্ব নিয়েছেন। আইনের হাত থেকে বাঁচতে সেলিম দম্পতি আগামী ১০ সেপ্টেম্বর দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে বাংলা আউটলুকের হাতে প্রমাণ এসেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজের অপরাধ চক্রের অন্যতম হোতা ছিলেন সেলিম মাহমুদ। এছাড়া শ্বশুর আওয়ামী লীগের এমপি ও মন্ত্রী কামাল মজুমদারের পরিচয় ব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। আর দেশে ৬০টির মতো ফ্ল্যাট, বাড়ি ও কয়েকশ বিঘা জমি কিনেছেন। এছাড়া শেয়ার বাজারে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন।
সেনাবাহিনীতে থাকাকালীন সামরিক পরিচয় গোপন ২ লাখ মার্কিন ডলারে অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডায় নাগরিকত্ব নিয়েছেন সেলিম ও তার স্ত্রী রাশাদা আকতার। পাসপোর্ট আবেদন ফর্মে সেলিম নিজেকে মোহনা টেলিভিশনের পরিচালক হিসেবে পরিচয় দেন। কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে এ ধরনের বৈদেশিক নাগরিকত্ব গ্রহণ সামরিক বাহিনীতে গুরুতর অপরাধ হলেও এই কর্মকর্তা স্বাভাবিক অবসর গ্রহণ করেন।
দুদকে করা আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সেলিম মাহমুদের দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত দেশি-বিদেশি সম্পদের তালিকা অনেক লম্বা। তার মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায় নামে-বেনামে রয়েছে ২৫টি ফ্ল্যাট, বনানী কবরস্থান রোডে ও ১২৩ নম্বর রোডে রয়েছে ৮টি বিলাশ বহুল ফ্ল্যাট, সাভার এলাকায় নামে-বেনামে রয়েছে ১৫০ বিঘা জমি, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় রয়েছে ২টি আবাসিক ভবন, বসুন্ধরা ঝিলমিল প্রকল্পে রয়েছে ৫ কাঠার ১৪টি প্লট, নারায়নগঞ্জের কাঞ্চন এলাকায় রয়েছে প্রায় ২০০ বিঘা সম্পত্তি, বিভিন্ন ব্যাংকে রয়েছে কোটি কোটি টাকা ও এফডিআর এবং শেয়ার বাজারে রয়েছে প্রায় হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে রয়েছে সেলিম মাহমুদের ৪টি বাড়ি, কানাডায় রয়েছে ১১টি বাড়ি, সুইজারল্যান্ডে রয়েছে সমুদ্র তীরে দুটি অবকাশ যাপন কেন্দ্র, যুক্তরাজ্যে রয়েছে ৩টি বাড়ি ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসা, দুবাইতে বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা, দুবাইতে দুটি আবাসিক হোটেল পরিচালনা করেন তার ৫ জন নিকট আত্মীয়।
দুদকে করা আবেদনে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও সাবেক সেনাপ্রধান ও শ্বশুর কামাল মজুমদারের ভয়ে কোনো কর্মকর্তা তদন্ত করতে রাজি হয়নি। সেনাবাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্নকারী দুর্নীতিবাজ সেনাকর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে নজির সৃষ্টি করে সেনাবাহিনীকে গৌরবান্বিত করতে আজ্ঞা হয়।