বিএনপির নেতাদের তদারকিতে সরল এস আলমের ১৪ বিলাসবহুল গাড়ি
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১১:৫০ পিএম
রাতের আঁধারে এস আলমের ১৪ বিলাসবহুল গাড়ি বের করার কাজের তদারকি করতে দেখা যায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনামকে।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে অবস্থিত একটি কারখানার ওয়্যারহাউজ থেকে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের ১৪ টি বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আর এই ১৪ গাড়ি নিরাপদে বের করতে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সহযোগিতা ছিল বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) মধ্যরাতে কর্ণফুলীর এস আলমের প্রতিষ্ঠান এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজের ওয়্যারহাউজ থেকে একে একে ১৪টি গাড়ি বের করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, চট্টগ্রাম বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতার উপস্থিতিতে একে একে সরিয়ে নেওয়া হয় ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি।
ভিডিওতে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে অন্তত ১৫ জনের একটি দল এস আলম গ্রুপের কর্ণফুলীর ওয়্যারহাউসের সামনে আসে। একই সময়ে আরও তিনটি গাড়ি সেখানে পৌঁছায়। সেখান থেকে একে একে নামেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম, পটিয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব অহিদুল আলম চৌধুরী পিবলু এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ হোসেন নয়ন। এরপর তাদের তদারকিতে একেএকে গাড়িগুলো বের হতে থাকে। বিলাসবহুল ১৪ গাড়ির মধ্যে রয়েছে বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ ও অডি ব্যান্ডের গাড়িও।
স্থানীয়রা সন্দেহ করছেন, গাড়িগুলোর ভেতরে নগদ অর্থ থাকার সম্ভবনা আছে। গাড়িগুলো কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করে এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে ফোনে তাকে পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, একটি গাড়ি থেকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের ড্রাইভার মনসুরকে নামতে দেখেছেন তিনি। সেই গাড়ির ভেতরে আবু সুফিয়ান থাকতে পারেন।
পুরো ঘটনার বিষয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এমন কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। আমি কোনো ওয়্যারহাউসেও যাইনি। তবে ওইদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে এনামুল হক এনামের অনুরোধে আমি তার মামাতো ভাই মীর গ্রুপের আবদুস সালামের মীর পাল্পের কারখানায় যাই। সেখানে বিএনপির পরিচয়ে কয়েকজন চাঁদা চাইতে গিয়েছিল। আমরা গিয়ে সেটা মিটমাট করে দিয়ে আসি।’
আর এস আলম গ্রুপ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের ব্যবস্থাপকের (মানবসম্পদ ও প্রশাসন) কাছে এই ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ধরনের কোনো ঘটনার বিষয়ে আমার জানা নেই। এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি বলেও তিনি দাবি করেন।
উল্লেখ্য, এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদের মেয়ের শ্বশুর মীর গ্রুপের আবদুস সালামের মামাত ভাই হন বিএনপি নেতা এনামুল হক এনাম।