সাক্ষাৎকার : মুন্সি ফয়েজ আহমেদ
ভারতের ওপর নির্ভর করে চললে হবে না
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৪, ০৯:১৯ পিএম
মুন্সি ফয়েজ আহমেদ
বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে সমানতালে আগ্রহ বাড়াচ্ছে ভারত ও চীন। ভৌগোলিক কারণে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে ভারত ও চীনের মধ্যকার এই প্রতিযোগিতা আরও জোরালোও হতে পারে। বিশেষ করে শেখ হাসিনা সরকারের দীর্ঘ দেড় দশকে চীন পদ্মা সেতুসহ মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সক্ষমতা দেখিয়েছে। অন্যদিকে ভারতও বিদ্যুৎখাতসহ বেশ কিছু জায়গায় তাদের অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। এই অবস্থায় দেশদুটির মধ্যে একটা প্রত্যক্ষ প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক মুন্সি ফয়েজ আহমেদ। বাংলা আউটলুকের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় নানা বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
বাংলা আউটলুক: ঢাকাকে কী একসঙ্গে ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে?
মুন্সি ফয়েজ আহমেদ: ভারত ও চীন এই অঞ্চলের বৃহৎ শক্তিধর দেশ। তবে অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও ভৌগোলিক দিক দিয়ে ভারতের চেয়ে চীন এগিয়ে থাকলেও রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের দিক থেকে বেইজিংয়ে চেয়ে এগিয়ে রয়েছে নয়া দিল্লি। যে কারণে কোনো দেশকেই এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই বাংলাদেশের। কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে তাই ঢাকাকে ‘চেক অ্যান্ড ব্যালান্স নীতি’ গ্রহণ করতে হচ্ছে।
বাংলা আউটলুক: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে কোন বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছে?
মুন্সি ফয়েজ আহমেদ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাপ্ত দিল্লি সফরে তিস্তা মহাপ্রকল্প ইস্যুটি গুরুত্ব পেয়েছে। তবে সেখানে পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। সফরে সত্যিকারার্থে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি নিয়েও কোনো আলোচনা হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুটি বিষয়কে হয়তো গুলিয়ে ফেলছেন। কেননা তিস্তা নদীর পানি চুক্তি ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা এক বিষয় নয়।
সফরে গঙ্গা নদী পানি বণ্টন চুক্তি নবায়নের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ২০২৬ সালে চুক্তিটি নবায়ন করা হবে। যেহেতু এটি একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি তাই সেখানে রাজ্যের ভেটো দেওয়ার তেমন কোনো সুযোগ নেই। একবার যখন চুক্তিটি হয়ে গেছে সে কারণে নবায়নে সমস্যা হবে বলে মনে হয় না। তবে একটি বিষয় লক্ষণীয় তা হলো রাজনৈতিক কারণেই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার চায় না রাজ্য সরকার কোনো ইস্যুতে নাখোশ হোক। যে কারণে ২০১১ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি করতে গিয়েও তারা শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে গেছে। তবে আইনগতভাবে গঙ্গা চুক্তি নবায়নে কোনো বাধা নেই।
বাংলা আউটলুক: সরকার পানি ইস্যুতে ভারতের ওপর বেশি নির্ভর?
মুন্সি ফয়েজ আহমেদ: পানি ইস্যুতে ভারতের ওপর নির্ভর করে চললে হবে না। তিস্তা ইস্যুতে ভারত তাদের ন্যায্যতা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমাদের তাদের পা ধরে বসে থাকলে চলবে না। অধিকারের প্রশ্নে আমাদের শক্তিশালী অবস্থান সৃষ্টি করতে হবে।
বাংলা আউটলুক: ভারত সফর কী ইতিবাচক ছিল:
মুন্সি ফয়েজ আহমেদ: আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদ্য সমাপ্ত ভারত সফর ইতিবাচক হিসেবে দেখছি। দুই দেশের মধ্যে অনেকগুলো চুক্তি ও সমঝোতা সই হয়েছে। এতে দুই দেশেরই লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বাংলা আউটলুক: আগামী জুলাই মাসের প্রথমদিকেই প্রধানমন্ত্রী চীন সফরে যাচ্ছেন। সেখানে নতুন কি থাকতে পারে?
মুন্সি ফয়েজ আহমেদ: নতুন কিছু করতে গেলেই তো বাগড়া আসে। দেখা যাক কি হয়। সে পর্যন্ত অপেক্ষা করি।