Logo
Logo
×

নির্বাচন ২০২৪

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাকচ : নতুন নির্বাচন দিতে ৬ আন্তর্জাতিক সংগঠনের বিবৃতি

Icon

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩:১৬ এএম

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাকচ : নতুন নির্বাচন দিতে ৬ আন্তর্জাতিক সংগঠনের বিবৃতি

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে তা বাতিল করে ফের নতুন নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে ৬ টি আন্তর্জাতিক সংস্থা। শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে সংস্থাগুলো এ আহ্বান জানায়। 

তবে শনিবার সরকারের পক্ষ থেকে এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলা হয়েছে, অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং বিভিন্ন দেশ প্রশংসা করেছে এবং নতুন সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে।  এই প্রেক্ষাপটে, নতুন করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য।

বিরোধী রাজনীতিকদের মুক্তি দাবি করে ওই বিবৃতিতে বলা হয়, এ নির্বাচন যথাযথ বা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক কোনোটিই হয়নি। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও আন্তর্জাতিক নির্বাচনী মানদণ্ড মেনে এ নির্বাচন হয়েছে কি না, সে বিষয়েও গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।

যৌথ বিবৃতি দেওয়া সংগঠনগুলো হলো- এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (এএনএফআরইএল), ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স ফর সিটিজেন পার্টিসিপেশন (সিআইভিআইসিইউএস), ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস (এফআইডিএইচ), এশিয়ান ডেমোক্রেসি নেটওয়ার্ক (এডিএন), ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রোজেক্ট (অস্ট্রেলিয়া) ও অ্যান্টি-ডেথ পেনাল্টি এশিয়া নেটওয়ার্ক (এডিপিএএন)।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এমন বহু খবর ও তথ্য-প্রমাণ আছে, যেগুলো নির্বাচনের আগে ও নির্বাচনের দিন ব্যাপক অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে। এগুলো গুরুতরভাবে গণতন্ত্রের মূল নীতিগুলো ক্ষুণ্ন করে। নির্বাচন সামনে রেখে বেপরোয়াভাবে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ এবং রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের দমনের ঘটনা ছিল উদ্বেগজনক। ভয় দেখানো, পরোয়ানা ছাড়া হয়রানি, মিথ্যা অভিযোগে বহু মানুষকে আটক এবং বিরোধী রাজনীতিক ও তাদের সমর্থকদের ওপর পরিচালিত সহিংসতা একটি বিশৃঙ্খল নির্বাচনী পরিবেশের চিত্র তুলে ধরে, যা কর্র্তৃপক্ষের নিপীড়নের কারণেই সম্ভব হয়ে থাকে।’

সংগঠনগুলোর ভাষ্য, ‘সভা-সমাবেশের স্বাধীনতার অধিকার, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা শুধু সরকারপন্থি দল, সংগঠন ও ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সংরক্ষিত হয়েছে। পক্ষান্তরে বিরোধী নেতাকর্মী ও ভিন্নমতাবলম্বীদের ক্ষেত্রে এসব মৌলিক অধিকার প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ধারাবাহিকভাবে সীমিত রাখা হয়। প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো নির্বাচন বর্জন করেছে। নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে পক্ষপাতমূলক অবস্থান, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সুস্পষ্ট পক্ষপাত এবং বিরোধী নেতাকর্মীদের দমন-পীড়নের কারণে তারা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়। 

অধিকন্তু নির্বাচন প্রক্রিয়াতেই বহু অনিয়মের খবর রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ভোটকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া। যেখানে ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকরা জোরজবরদস্তি, বলপ্রয়োগ বা ভয়ভীতি দেখিয়ে বুথের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভোটদান প্রক্রিয়া নিজেদের ইচ্ছেমতো পরিচালিত করে বিশেষ প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করেছে।’

নির্বাচন কমিশন ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে যে তথ্য দিয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, সারা দেশের ভোটকেন্দ্রগুলোতে থেকে যেসব খবর পাওয়া গেছে এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা যেসব তথ্য দিয়েছেন, তাতে ভিন্ন চিত্র পাওয়া গেছে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের মানুষ এমন একটি নির্বাচন প্রক্রিয়া পাওয়ার অধিকারী, যেটা স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক হবে এবং যে নির্বাচনের মাধ্যমে সম্মিলিতের আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটবে, যে নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রতি সব শ্রদ্ধা ও আস্থা রাখবে। একটি অংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করছি। 

আমরা বাংলাদেশের সরকারের প্রতি একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য পদক্ষেপ নিতে জোরালো আহ্বান জানাচ্ছি। আর এই নির্বাচন হতে হবে সব রাজনৈতিক দলের মতৈক্যের ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংস্থা ও একটি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে।’

বিবৃতিতে নতুন নির্বাচনের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিও আহ্বান জানানো হয়েছে।

নতুন নির্বাচন দাবি করে দেওয়া সংস্থাগুলোর বিবৃতিকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যাখান করে বলা হয়েছে, বিবৃতিতে উল্লেখ অভিযোগগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন