মৃত, বিদেশে থাকা মানুষও ভোট দিয়েছে : নৌকার প্রার্থী মমতাজ
প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩:০৩ এএম
৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেমন হয়েছে তা এখন মানুষের মুখে মুখে। খোদ আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থী, তাদের ডামি প্রার্থীরা নির্বাচনে অনিয়মের চিত্র তুলে ধরেছেন। নৌকার প্রার্থী সঙ্গীত শিল্পী মমতাজ বেগম অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনে বিদেশে থাকা, মৃত মানুষ ভোট দিয়েছে।
শুক্রবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ থলের বিড়াল সব বেরুচ্ছে। সব অপকর্মের খবর ফাঁস করছে। এতো দিন বাংলাদেশ তথা বিএনপি বলেছে শেখ হাসিনা ভোট ডাকাত আর এখন আওয়ামী লীগের লোকজনই বলছে "শেখ হাসিনা ভোট চোর, শেখ হাসিনা ভোট ডাকাত”।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের দিনে প্রধান নির্বাচন কমিশনের দিবানিদ্রায় ছিলেন। পাতানো ডামি নির্বাচনের পর এর ফলাফল নিয়ে আওয়ামী লীগ, তাদের ডামী আর তাদের ডামী শরীকদের মধ্যেই শুরু হয়েছে গৃহদাহ। খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বুধবার রাতে ভোট হওয়ার স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেছেন, ‘‘এবার দিনের ভোট রাতে হয়েছে বলার ক্ষমতা নেই”। এসব কথা বলে তাদের দলের অভ্যন্তরীন বিবাদ-গৃহদাহ নিরসন করতে চাইলেও ব্যর্থ হচ্ছেন। আওয়ামী লীগের পরাজিত নেতারাই শেখ হাসিনাকে অবৈধ ভোটের প্রধানমন্ত্রী উপাধি দিচ্ছেন। এবার যে নির্বাচনের নামে ভোট ডাকাতি হয়েছে তা নিজেরাই সংবাদ সম্মেলন করে তুলে ধরছেন। এতোদিন দেশের সমস্ত জনগন বলেছে, আমরা বলেছি। আর এখন তারা নিজেরাই গত তিনটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতির সমস্ত প্রক্রিয়ার কথা বলছেন।’
সংসদে ফেরী করে বিদ্যুৎ বিক্রি করার কথা বলা সঙ্গীত শিল্পী মমতাজ বেগম তার হারের কারণ তুলে ধরতে গিয়ে বলেছেন, ‘মৃত মানুষ, বিদেশে আছে তাদের ভোটও দেয়া হয়েছে।’
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার পূর্বভাকুমে নিজের বাড়িতে কর্মীসভায় মমতাজ বলেছেন, ‘সিংগাইর উপজেলার বলধরা, বায়রা ইউনিয়ন ও সিংগাইর পৌরসভার ভোটকেন্দ্র গুলোতে অস্বাভাবিক ভোট পড়েছে। বিদেশে আছে, মারা গেছে তাদের ভোটও দেয়া হয়েছে। আমি অন্য জায়গায় পাস করলেও, এসব এলাকায় অস্বাভাবিক ভোট হওয়ায় পরাজিত হয়েছি।’
আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী ও দলটির প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ বলেছেন, ‘নির্বাচনে অলৌকিক শক্তি কাজ করায় ভোটে কারচুপি হয়েছে। একচেটিয়া ভোট ডাকাতি হয়েছে।’
মঙ্গলবার ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বরগুনা-১ আসনের আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, সদর উপজেলার অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রের ফলাফল সদর উপজেলায় বসে এক হাতে তৈরি করা হয়েছে। ১৬টি ভোটকেন্দ্রের ফলাফলে কেন্দ্রের এজেন্টদের স্বাক্ষর নেই। রেজাল্ট শিট দেখলে মনে হবে এক হাতে তৈরি করা। আমি নিশ্চিত জয়লাভ করেছি। ষড়যন্ত্র করে রেজাল্ট শিট তৈরি করে আমার ফলাফল পালটে দেওয়া হয়েছে।’
পরাজিত একপার্টির এক নেতা বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা তামাশার নাটক করেছেন। তার ক্ষমতায় থাকার লিপ্সা পূর্ণ করতে আমাদের সিঁড়ি বানিয়ে এখন ছুড়ে ফেলেছে। কাকে কত টাকা দিয়ে নির্বাচনে নেওয়া হয়েছে তা প্রকাশ্যে হিসাব দিচ্ছেন পরাজিত প্রার্থীরা।