Logo
Logo
×

নির্বাচন ২০২৪

নির্বাচনের ফল নিয়ে আওয়ামী লীগে গৃহদাহ

Icon

প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:৫৫ পিএম

নির্বাচনের ফল নিয়ে আওয়ামী লীগে গৃহদাহ

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে নৌকা ও স্বতন্ত্র সমর্থকদের মধ্যে নির্বাচনের আগে সংঘর্ষ। ছবি : সংগৃহীত

পাতানো নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আওয়ামী লীগ আর তাদের শরীকদের মধ্যেই শুরু হয়েছে গৃহদাহ। নেত্রী জিতিয়ে আনবেন এই আশায় যারা ভোটের আগে এই হাস্যকর নির্বাচন নিয়ে কোন কথাই বলেনি, তথাকথিত নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর তারা মুখ খুলতে শুরু করেছেন।

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনটি ছিল ভাগাভাগির আসন। এ আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। নৌকার প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফরোজা বারীকে বসিয়ে। আওয়ামী লীগ আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেয়।  কিন্তু আফরোজা বারীর বড় মেয়ে আবদুল্লাহ নাহিদ নিগার স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হন। ছাড় পেয়েও হেরে গেছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি মনে করেন   প্রশাসনের মাধ্যমে তাদেরকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সকাল ১০টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত নগন্য ভোটার উপস্থিতি ছিল। অনেক কেন্দ্র ে২/৩ জন ভোটার ছিলেন, কিন্তু শেষে কাস্টিং যা দেখানো হয়েছে তাতে তার মনে হচ্ছে, এখানে ভোট কারচুপি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জাতীয় পার্টির পরাজয়ের কারণ হচ্ছে, ’সরকার আমাদের পরাজিত করতে চেয়েছিল। সরকারি দলের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। প্রশাসন ও সরকার আমাদের পরিকল্পিতভাবে হারিয়ে দিয়েছে।;

কুষ্টিয়া-২ আসনের ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুল আরেফিন ট্রাক প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৯৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। হাসানুল হক পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪৪৫ ভোট। জাসদের এই নেতা ২০০৮ সাল থেকে গত তিনটি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে সংসদ সদস্য হন। এবার পরাজিত হয়ে তিনি নানা অভিযোগ তুলেছেন।  তিনি বলছেন, তাকে জনগণের ভোটে নয়, কারচুপির ভোটে হারানো হয়েছে। ইনু বলেন, তার প্রতিপক্ষের গুন্ডা বাহিনীর প্রভাবে ১৮টিতে অস্বাভাবিক ভোট হয়েছে। ১টি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী পেয়েছেন ২ হাজার ৮০০ ভোট, ওই কেন্দ্রে  নৌকা প্রতীকে মাত্র ৮৫ ভোট। তিনি বলেন, ভোটে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটা বিরাট অংশ প্রশাসনের সহযোগিতায় নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদেরও একাংশ নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেছে। ইনু মনে করেন ১৪ দলের শরিক জেপি নেতা আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে্ও হারিয়ে দেয়া হয়েছে।  

জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ৭ জানুয়ারি ‘সঠিক’ নির্বাচন হয়নি। এটি সরকারের ইচ্ছানুযায়ী একটি নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন ছিল। এই সরকারকে কেউ বিশ্বাস করবে না, সরকারের গ্রহণযোগ্যতা যেটা ছিল, সেটাও থাকবে না।

ভোটের পরদিন আজ সোমবার দুপুরে মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে এসব কথা বলেন জি এম কাদের।

জি এম কাদের গতকাল রোববার ভোটের পর নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। ভোট চলাকালে দুপুরে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘সব সময় আমাদের আশঙ্কা ছিল যে নির্বাচনে নিয়ে এসে আমাদের কোরবানি করা হবে। কোরবানি করে নির্ভেজাল, একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করা হবে। এসব আশঙ্কা সত্যি হয় কি না, তা বিকেল হলেই বোঝা যাবে।’

ভোটের পর প্রতিক্রিয়া না জানালেও আজ সকালে রংপুরে জি এম কাদের গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানিয়েছেন, তিনি দু–তিন দিন পরে ঢাকায় ফিরবেন। তখন দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।

মুঠোফোনে জি এম কাদের বলেন, সরকারের ইচ্ছানুযায়ী কোথাও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও ফ্রি করে দেওয়া হয়েছে, সেখানে তারা ঢালাওভাবে অনিয়ম করতে পেরেছে। কোনো কোনো জায়গায় নির্ধারণ করা ছিল, কাকে পাস করানো হবে। অর্থাৎ, নির্বাচনটা সরকার নিয়ন্ত্রণ করেছে। আগে যেভাবে নির্বাচন হয়েছে, এটাও সে রকম।

জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা মনে করেছিলাম, সরকার আশ্বাস দিয়েছিল, নির্বাচন আগের মতো হবে না। কেন্দ্র জবরদখল হবে না, প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকবে, সেটা পাইনি।’

জাতীয় পার্টি এবারের নির্বাচনে ১১টি আসনে জয় পেয়েছে। বর্তমান সংসদে তাদের নির্বাচিত সংসদ সদস্য রয়েছেন ২৩ জন। এর ফলে জাতীয় পার্টির আসনসংখ্যা কমে অর্ধেকের নিচে নামল। ওদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন ৬২ জন। তাঁদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের নেতা।

সব মিলিয়ে বিরোধী দল কে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। স্বতন্ত্ররা জোট করে বিরোধী দল হতে পারে, এমন সুযোগ আইনে রয়েছে। এর ফলে জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দলের অবস্থানও হারাতে পারে।

সংসদে বিরোধী দল কে হবে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে জি এম কাদের বলেন, ‘সেটা আমি জানি না। তবে আইন অনুয়ায়ী যা হওয়ার, তা–ই হওয়া উচিত। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের একটি বড় অংশ জয়ী হয়েছে। এরপর আমরা (জাপা) আছি। স্বতন্ত্ররা তো দলীয় না। স্বতন্ত্র দিয়ে তো কোনো বিরোধী দল হয় না, তাঁদের দলে যোগ দিতে হবে।’

জি এম কাদের বলেন, ‘৫টি হোক ১০টি হোক, নৌকার বিপক্ষে এখন পর্যন্ত লাঙ্গল আছে, এ পর্যন্তই জানি। আমরা সংসদে যেতে চেয়েছি, যে কয়টা হোক পেয়েছি। তবে নির্বাচন ভালো হয়নি। এখন আমরা বসব পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য।’

এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির জন্য ২৬টি আসন ছেড়ে দেয়। সেখানে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ছিল না। এ বিষয়ে জি এম কাদের বলেন, ‘আমি একটি কথা বারবার বলছি, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের কোনো জোট হয়নি, সমঝোতা হয়নি। আমরা তাদের কাছে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়েছিলাম। দলীয়করণের কারণে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একপক্ষ হয়ে গেছে, সেটা যাতে নিরপেক্ষ হয়, জোর করে কেন্দ্র দখল হবে না, আমাদের প্রার্থীরা যাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। কিন্তু তা হয়নি।’

জি এম কাদের বলেন, ‘যে ২৬টি আসনে আওয়ামী লীগ নৌকার প্রার্থী দেয়নি, সেটা তাদের পছন্দে হয়েছে। এই তালিকার অনেকে আমাদের দল থেকে বহিষ্কৃত। রংপুর ছাড়া দুই-এক জায়গায় নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, সেটা সরকারের ইচ্ছানুযায়ী। বাকিগুলোতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। ছাড় দেওয়া হয়নি।’

জি এম কাদের মনে করেন, ২৬ আসনে সমঝোতার কথা বলে অন্যান্য জায়গায় তাঁদের প্রার্থীদের বিভ্রান্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের দিন ২৬ আসনের বাইরের অন্তত ২০ জন প্রার্থী আমাকে ফোন করে বলেছেন যে জোর করে কেন্দ্র দখল করা হচ্ছে, তাঁদের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে অভিযোগ করলেও পোলিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসার, এমনকি রিটার্নিং অফিসার উল্টো অনিয়মকারীদের “এন্টারটেইন” করেছে।’

আমার বিশ্বাস, নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে না

এদিকে রংপুরে নিজের পৈতৃক নিবাসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জি এম কাদের বলেন, ‘সার্বিকভাবে নির্বাচন ভালো হয়নি। যেটি আশঙ্কা করেছিলাম, সেটিই হয়েছে। সরকার যেখানে যাকে জেতাতে চেয়েছে, সেটিই হয়েছে। যার জন্য নির্বাচনে কেউই আসতে চাচ্ছে না। আমার বিশ্বাস, এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।’

জি এম কাদের আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা নতুন ধরনের ডাইমেনশন (মাত্রা) দেখা গেল। এটার জন্য ভবিষ্যতে সরকারকে মাশুল দিতে হবে বলে আমার বিশ্বাস।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করে এসছিলাম, তারা সেটা রক্ষা করেনি।’

ভোটে অনিয়ম নিয়ে রংপুরেও কথা বলেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগের রাত থেকে আমরা অনেক জায়গা থেকে খবর পাচ্ছিলাম, সেখানে আমাদের প্রার্থীদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে, হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে সারা দিন ধরে বিভিন্ন জায়গা থেকে কমপ্লেইন (অভিযোগ) এসেছে। একই কথা ১০টা, ১১টা, ১২টার মধ্যে তারা সমস্ত কেন্দ্রগুলো দখল করে ফেলেছে।

তারা আমাদের এজেন্টদের বের কেরে দিয়ে তাদের এজেন্টদের দিয়ে সিল মারিয়ে নিচ্ছে, যেখানে প্রিসাইডিং অফিসাররা আমাদের মানুষদের সমর্থন করেননি। প্রশাসন সম্পুর্ণ তাদের কাজ করেছে, যেটা আমরা সব সময় আশঙ্কা করেছিলাম।’

নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে জি এম কাদের বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নেওয়া ভুল কি শুদ্ধ, এটা এখনই মূল্যায়ন করা যাবে না। সামনের দিনগুলো দেখতে হবে। এরপর আমরা বিষয়টি বুঝতে পারব।’

র্বাচনে অলৌকিক শক্তি কাজ করায় ভোটে সূক্ষ্ম কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মাদারীপুর-৩ (কালকিনি-ডাসার-সদর একাংশ) আসনের আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী ও দলটির প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মাদারীপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন মাদারীপুর-২ (রাজৈর-সদর একাংশ) আসনের আওয়ামী লীগের বিজয়ী প্রার্থী শাজাহান খান।

সংবাদ সম্মেলনে আবদুস সোবহান বলেন, ‘নির্বাচনে নৌকার ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দিয়েছে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের সমর্থকেরা। তারা কালকিনি পৌরসভাসহ বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে নৌকার পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। বিশেষ করে কালকিনি পৌরসভার ১৬টি কেন্দ্রের মধ্যে ১২টি কেন্দ্র তারা দখলে নিয়ে ভোটে সূক্ষ্ম কারচুপি করেছে। এই ১২টা কেন্দ্রে আমাদের নৌকার কোনো এজেন্ট ছিল না। এ কারণে ঈগল একচেটিয়া ওখানে ভোট কেটে নিয়ে গেল। অন্য কয়েকটি ইউনিয়নেরও তারা একচেটিয়া ভোট নিয়ে গেল।’

নৌকার সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ তুলে আবদুস সোবহান বলেন, ‘এটা নৌকার আসন (মাদারীপুর-৩)। আমরা চেয়েছিলাম, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন হোক। ভোটাররা কেন্দ্র আসুক। তাহলে আমরা আশাবাদী ছিলাম, বিপুল ভোটে আমরা জিতব। কিন্তু ভোটার উপস্থিতি খুবই কম ছিল। হিন্দু ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে দেয় নাই। তাদের বাধা দিছে। আবার দেখা গেছে, যে হিন্দু পুরুষ ভোটাররা কেন্দ্রে আসছে, মহিলারা বাসায় রয়েছে। এই সুযোগে পুরো ঘর লুটপাট করেছে, ভাঙচুর করেছ, আগুন দিয়েছে। যার প্রমাণ কেন্দুয়া এলাকায়। সেখানে ৩৮টি বাড়িতে নৌকায় ভোট দেওয়ায় তাদের বাড়িঘর লুটপাট ও আগুন দেওয়া হয়েছে।’

আবদুস সোবহান বলেন, ‘ভোটের দিন রাতে ও পরের দিন যাঁরা নৌকায় ভোট দিয়েছেন, এমন প্রায় ৩০০টি পরিবারের বসতঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। গরিব মানুষের গরু, ছাগল লুট করে নেওয়া হয়েছে। এই ধ্বংসযজ্ঞ একাত্তরের বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। নির্বাচনের পরবর্তী সময় এখন যা সহিংসতা হচ্ছে, তা মেনে নেওয়া যায় না।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে হার-জিত হবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বোমাবাজি করে, মানুষের ঘরে আগুন দিয়ে, লুটপাট করে তারা কী বোঝাতে চাচ্ছে? আমি প্রশাসনের কাছে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাই এবং আমি এ সংঘাত থেকে মুক্তি চাই।’

নির্বাচনে সূক্ষ্ম কারচুপির অভিযোগ করে আবদুস সোবহান বলেন, ‘নৌকা ভোটে হারেনি। সূক্ষ্ম কারচুপি ও ষড়যন্ত্রের কারণে আমরা হেরেছি। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটায় আমরা হেরেছি। যার প্রমাণ আমি কমিশনে লিখিত আকারে পাঠিয়েছি।’ প্রশাসনকে নিজের লোক দাবি করে আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী বলেন, ‘ডিসি, এসপি, ওসি, ইউএনও সব আমাদের লোক, এই সরকারের লোক। এর বাইরে একটি শক্তি কাজ করল। একজন ম্যাজিস্ট্রেট নৌকার এজেন্টকে ধরে নিয়ে গেল। সে এত শক্তি কোথা থেকে পেল? সে তো ডিসি দ্বারা পরিচালিত না। এসব কারণে আমরা ভোটে হারিনি, সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্রের কারণে আমরা হেরেছি। এখানে ঈগল জিতেছে, নৌকার পরাজয় হয়েছে। তবে সেটা ভোটের মাধ্যমে নয়। কারচুপি করে ঈগল জিতেছে।’

অলৌকিক শক্তি কে, এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুস সোবহান বলেন, ‘আমি রানিং এমপি। নির্বাচনের মাঠে ছিলাম। আমি ফাইন্ডিং করেছি, এখানে একটি অলৌকিক শক্তি কাজ করেছে। এই শক্তির পেছনে কারা কাজ করছে, তা ফাইন্ড আউট করতে আমি সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। তারা খুঁজে বের করার কাজ করছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘পুরোটা নয়, পৌরসভার ১২টি কেন্দ্র দেখেন। এসব কেন্দ্রে নৌকা ১৯, ২০, ১৬ ভোট পেয়েছে। এত কম কীভাবে সম্ভব? এটা নৌকার জন্য অগ্রহণযোগ্য একটি ফিগার।’

সংবাদ সম্মেলন শেষে মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খান বলেন, মাদারীপুরে বহু নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের পরে এমন সহিংসতা কখনো হয়নি। এখানে কিছু লোক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। এসব লোকদের অনেককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যেকোনো মূল্যেই এ সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। আবদুস সোবহানের বিষয়ে বলেন, ‘নির্বাচনে অপশক্তির পেছনে যারা জড়িত, তাদের অবশ্যই চিহ্নিত করা যাবে। যদি আওয়ামী লীগের কোনো কর্মী জড়িত থাকে, দল বিচার করবে। অন্য কেউ জড়িত থাকলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।

এ সময় কালকিনি পৌরসভার মেয়র এস এম হানিফ, মাদারীপুর-৩ আসনের আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক সরদার মো. লোকমান হোসেন, মাদারীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মাদারীপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান ওরফে গোলাপকে ৩৪ হাজার ৬৬২ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম (ঈগল)। বিজয়ী তাহমিনা সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ও কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন