Logo
Logo
×

অর্থনীতি

আড়াই হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে তারল্য সংকটে থাকা দুই ব্যাংকে দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০২:০৩ পিএম

আড়াই হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে তারল্য সংকটে থাকা দুই ব্যাংকে দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংক তারল্য সংকটে থাকা সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (SIBL) ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংককে (FSIBL) সরাসরি অর্থ সহায়তা দিতে যাচ্ছে। এই সহায়তা টাকা ছাপিয়ে দেওয়া হবে এবং এর বিপরীতে কোনো জামানত রাখা হবে না।

গত সপ্তাহে এ দুই ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তারল্য সহায়তার আবেদন জানায়। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সেই আবেদনে অনুমোদন দেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিক জানান, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে দেওয়া হবে ১,৫০০ কোটি টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংককে দেওয়া হবে ১,০০০ কোটি টাকা।

তিনি আরও বলেন, “এটি হাই-পাওয়ার্ড মানি, অর্থাৎ নতুন টাকা ছাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”

রাজনৈতিক পরিবর্তন ও ব্যাংক সংকট

২০২৩ সালের ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক পরিবর্তনের ফলে ব্যাংক খাতে সংস্কার শুরু হয়। ক্ষমতার পালাবদলের পর এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা সাতটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ হারিয়ে ফেলে।

এরপর নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নিয়ে এস আলমের ব্যাংকগুলোতে সরাসরি তারল্য সহায়তা বন্ধ করে দেন। ফলে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট চরম আকার ধারণ করে। ব্যাংক বন্ধ হয়ে যেতে পারে—এমন গুজবে গ্রাহকরা大量 পরিমাণে আমানত উত্তোলন করতে শুরু করেন, যার ফলে এই সংকট আরও তীব্র হয়।

পূর্বের তারল্য সহায়তা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পদক্ষেপ

সংকট সমাধানে প্রথমে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তঃব্যাংক থেকে তারল্য সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছিল, কিন্তু তা সফল হয়নি। ফলে ২০২৪ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ছয়টি ব্যাংকে ২২,৫০০ কোটি টাকা সহায়তা দেওয়া হয়।

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সে সময় বলেন, “টাকা ছাপিয়ে তারল্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে, তবে এটি ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিল’ এর মাধ্যমে পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা চলছে।”

এর আগে যেসব ব্যাংক সহায়তা পেয়েছে:

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (SIBL) – ৫,৫০০ কোটি টাকা

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক (FSIBL) – ৬,৫০০ কোটি টাকা

ন্যাশনাল ব্যাংক – ৫,০০০ কোটি টাকা

ইউনিয়ন ব্যাংক – ২,০০০ কোটি টাকা

বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক – ২০০ কোটি টাকা

আইসিবি ইসলামী ব্যাংক – ১০ কোটি টাকা

গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক – ২,০০০ কোটি টাকা

এক্সিম ব্যাংক – ৮,৫০০ কোটি টাকা

এবি ব্যাংক – ২০০ কোটি টাকা

ব্যাংক খাতের ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

বিশ্লেষকদের মতে, টাকা ছাপিয়ে তারল্য সংকট সমাধান করার এই প্রবণতা অর্থনীতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এর ফলে মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়তে পারে এবং অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংক আরও কী পদক্ষেপ নিতে পারে, তা দেখার বিষয়। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা ফেরাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আপাতত এই ধরনের নগদ সহায়তা দিচ্ছে।


Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: banglaoutlook@gmail.com

অনুসরণ করুন