অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে ‘মন্থর সংস্কার’ নিয়ে সতর্ক করলেন ড. দেবপ্রিয়
ইউএনবি
প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩৫ পিএম
বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করেছেন শ্বেতপত্রবিষয়ক কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। সরকার তার সংস্কার কার্যক্রম ত্বরান্বিত না করলে বাংলাদেশে সংস্কারপন্থী মনোভাবের গুরুত্ব কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এর মানে হলো, যারা এখন সংস্কারের পক্ষে, অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতার কারণে একপর্যায়ে তারা ভারসাম্যপূর্ণ সংস্কার থেকে সরে আসতে পারেন।’
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘শ্বেতপত্র ও অতঃপর: অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, সংস্কার ও জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক সিম্পোজিয়ামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রবৃদ্ধির প্রবণতা, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক সুরক্ষা মোকাবিলার গুরুত্বের কথাও তুলে ধরেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক।
দেশে নির্বাচন ও সংস্কারকে কেন্দ্র করে বর্তমানে সংঘাতের সৃষ্টি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন ড. দেবপ্রিয়। এছাড়া ধীরগতির প্রবৃদ্ধি, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের অভাব ও কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জকে জরুরি বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে আসন্ন বাজেট নিয়ে বিস্তৃত আলোচনার আহ্বান জানান তিনি। তার মতে, ‘প্রবৃদ্ধির হার বিশেষ করে ধীর হয়ে পড়ছে, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ হচ্ছে না, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও সমস্যা বিদ্যমান।’
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সুস্পষ্ট অর্থনৈতিক ইশতেহার উপস্থাপন না করায় সরকারের সমালোচনা করেন এই গবেষক।
তিনি বলেন, একটি সমন্বিত নীতি কাঠামোর এই অভাব মূল্যায়ন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রশাসনের গৃহীত বিচ্ছিন্ন পদক্ষেপগুলো স্বীকার করার পাশাপাশি তিনি একটি সুষম ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য বিস্তৃত পরিকল্পনার ঘাটতির কথাও তুলে ধরেন।
সিপিডির এই সম্মানীয় ফেলো বলেন, এলডিসি উত্তীর্ণ হওয়ার মতো বিষয়গুলো সরকার কীভাবে মোকাবিলা করবে এবং পিছিয়ে পড়াদের মধ্যমেয়াদি সহায়তা দেবে— সে বিষয়েও আমাদের স্পষ্টতা প্রয়োজন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রণীত বাজেটের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমান সরকার সংশোধিত বাজেট পেশ না করায় আগের বাজেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব সূচক অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে।
উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে স্বচ্ছতার অভাবেরও সমালোচনা করেন এই অর্থনীতিবিদ। বলেন, ‘এসব প্রকল্প যাচাই-বাছাই করার জন্য দৃশ্যমান নীতিমালা না থাকলে এগুলোর প্রভাব ও সম্ভাব্যতা মূল্যায়ন করা চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়ে।’