চলমান ও ভবিষ্যৎ কর্মসূচির জন্য বিশ্বব্যাংক, আইএমএফের সহায়তা চায় সরকার: অর্থ উপদেষ্টা
ইউএনবি
প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৫০ পিএম
অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ
অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সরকার বিভিন্ন চলমান ও ভবিষ্যৎ কর্মসূচির জন্য বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা চেয়েছে। বাংলাদেশ সচিবালয়ে অর্থ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে বিশ্বব্যাংক ও ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে ড. সালেহউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, 'কারিগরি ও আর্থিক সহায়তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে তাদের অনুরোধ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, 'আমাদের চলমান ও ভবিষ্যৎ কিছু কর্মসূচিতে তাদের সহযোগিতা চেয়েছি। আমরা পরে আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের প্রয়োজনীয়তাগুলো জানাব এবং আরও আলোচনা হবে।’
বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতের সংস্কার, পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার, আয়কর ও ভ্যাট আদায় বৃদ্ধিসহ কর সংস্কারের মতো ক্ষেত্রে সহায়তা চাইছে সরকার।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, বিভিন্ন অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সংস্কার সাধনের জন্য সরকারের সম্পদের প্রয়োজন। সহায়তার জন্য আইএমএফকে অনুরোধ করা হলেও, পুনরাবৃত্তি এড়াতে অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গেও সমন্বয় করছে সরকার।
তিনি আরও যোগ করেন, ‘বিভিন্ন অংশীদারের কাছ থেকে যেসব সহায়তা আমরা চাই, তাতে কোনো ওভারল্যাপ যেন না ঘটে- তা আমরা নিশ্চিত করব।’
ড. সালেহউদ্দিন জোর দিয়ে বলেন, স্থানীয় সম্পদকে যতটা সম্ভব ব্যবহার করবে সরকার। তবে কিছু ক্ষেত্রে বৈদেশিক সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিছু ক্ষেত্রে, আমাদের আইএমএফের মতো বাহ্যিক উৎস থেকে অর্থায়ন প্রয়োজন, যা পেমেন্ট সহায়তার ভারসাম্য রক্ষা করে, পাশাপাশি রাজস্ব ও ব্যাংকিং খাতের সংস্কারে সহায়তা করে।’
বৈঠকে সরকার বিশ্বব্যাংক, রাজস্ব ও অন্যান্য খাতে সংস্কার বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক ও আইএফসিকে জানিয়েছে। সালেহউদ্দিন বলেন, ‘এটি কোনো প্রযুক্তিগত দল ছিল না, তবে আমরা আমাদের বিস্তৃত উদ্দেশ্য এবং নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করেছি।’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে, যদিও এসব সংস্কার বাস্তবায়ন করতে সময় লাগবে। বৈদেশিক মুদ্রা বাজার সমস্যা, ব্যাংকিং সংস্কার এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা করছে বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি দল। তারা কর সংস্কার উদ্যোগকে সমর্থন করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গেও জড়িত থাকবে।
উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, অক্টোবরে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক গ্রুপের আসন্ন বার্ষিক সভার সময় আরও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকরা ঋণদাতা সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
এ সময় বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার রিজিওনাল ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার, দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ইমদাদ ফখৌরি, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ অপারেশন ম্যানেজার গেইল মার্টিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন, বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগে সহায়তা করতে বিশ্বব্যাংক ৩.৫ বিলিয়ন ডলার দেবে। এর মধ্যে ২ বিলিয়ন ডলার নতুন ঋণ এবং ১.৫ বিলিয়ন ডলার বিদ্যমান কর্মসূচি থেকে পুনঃনির্ধারণ করা হবে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বাঙ্গা এ ঘোষণা দেন।