বাংলাদেশ-চীন বেসরকারি বাণিজ্যিক খাতে ১৬ সমঝোতা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪৫ পিএম
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য-বিনিয়োগ বাড়াতে বেসরকারি পর্যায়ে ১৬ টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেইজিংয়ের সাংগ্রিলা সার্কেলে 'সামিট অন ট্রেড, বিজনেস এন্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ বিটুইন বাংলাদেশ এন্ড চায়না' সম্মেলনে এই সমঝোতা সই হয়। পরে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ৯০ জন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও চীনের শতাধিক ব্যবসায়ী এ সম্মেলনে যোগ দেয় এবং বাংলাদেশ ও চীনের বেশ কয়েকটি কোম্পানির মধ্যে ১৬টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে।
সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী চীনা ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে বিশ্বের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থার সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান। অবকাঠামো, আইসিটি, পর্যটন, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ জ্বালানি খাত, জলবায়ু-সহনশীল স্মার্ট ফার্মিং, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সবুজ প্রযুক্তি ও উন্নয়ন খাতে বৃহত্তর বিনিয়োগের আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় তিনটি বিশেষ পর্যটন অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা ও সেখানে চীন রিয়েল এস্টেট এবং হসপিটালিটি খাতে বিনিয়োগের সুযোগের কথা উল্লেখ করলে চীনারাও এ বিষয়ে যথেষ্ট উৎসাহ দেখান। বাংলাদেশ দূতাবাস, বিআইডিএ, বিএসইসি ও চায়না ওয়ার্ল্ড সামিট উইং আয়োজিত এ সম্মেলনে চীনের ভাইস মিনিস্টার অব কমার্স জনাব লি ফেই, চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান জনাব ওয়াং টং ঝু, এইচএসবিসি চায়নার প্রেসিডেন্ট এবং সিইও জনাব মার্ক ওয়াং, হুয়াওয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জনাব সাইমন লিন তাদের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে আরো জানান, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থেকে চীন সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেবে। মঙ্গলবার বিকেলে বেইজিংয়ের গ্রেট হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে চাইনিজ পিপল'স পলিটিক্যাল কনসাল্টেটিভ কনফারেন্সের (সিপিপিসিসি) জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াং হুনিং এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সিপিপিসিসির জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যানের অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে এ বৈঠকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং চীনের কম্যুনিস্ট পার্টির মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে গুরুত্বারোপ করেন তারা। দলীয় নেতৃবৃন্দের পারস্পরিক সফরের বিষয়েও ঐক্যমত হয়। ওয়াং হুনিং বলেন, চীনের কম্যুনিস্ট পার্টি এবং আওয়ামী লীগ উভয়েরই অভিন্ন লক্ষ্য জনগণের কল্যাণ।
উল্লেখ্য, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া সম্মেলনে বক্তব্য দেন এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল ইসলাম বিনিয়োগ বিষয়ে উপস্থাপনা পেশ করেন।
মঙ্গলবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের ঐতিহ্যবাহী তিয়েনআনমেন স্কয়ারে শ্রদ্ধা নিবেদন ও রাতে বেইজিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দেন।