Logo
Logo
×

অর্থনীতি

চতুর্থ শীর্ষ ঋণদাতার তালিকায় উঠে এলো চীন, পরিশোধের স্বল্প মেয়াদ নিয়ে উদ্বেগ

Icon

ইউএনবি

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১০:১১ এএম

চতুর্থ শীর্ষ ঋণদাতার তালিকায় উঠে এলো চীন, পরিশোধের স্বল্প মেয়াদ নিয়ে উদ্বেগ

বাংলাদেশের চতুর্থ শীর্ষ বৈদেশিক ঋণদাতা চীন। অবকাঠামো খাতের অন্যতম প্রধান বিনিয়োগের উৎস এই ঋণ। বিশেষজ্ঞরা এই ঋণ পরিশোধের মেয়াদ নিয়ে উদ্বিগ্ন।

২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয় বাংলাদেশ সফর করেন। সে সময় তিনি ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর প্রতিনিয়ত বেড়েছে চীনা ঋণ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এর পরিশাণ বছরে ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

এসব ঋণের সুদ ২ থেকে ২.১৫ শতাংশ। পরিশোধের সময় ১০-১৫ বছর।

অন্যদিকে বিশ্বব্যাংক বা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) মতো প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ দেয় ৩০ থেকে ৪০ বছরের জন্য।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এতে দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের আর্থিক ব্যবস্থার ওপর চাপ পড়তে পারে।

এছাড়া এসব ঋণের সঙ্গে যুক্ত প্রকল্পের ঠিকাদার বাছাই প্রক্রিয়ার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা আশঙ্কা করছেন, এত অল্প সময়ে বড় অঙ্কের ঋণ পরিশোধের ফলে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চাপে পড়তে পারে, যার ফলে বড় ধরনের সংক দেখা দিতে পারে।

গত চার বছরে চীন প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে বাংলাদেশকে, যা ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশকে দেওয়া তাদের মোট ঋণের প্রায় ৪০ শতাংশ। ঋণের এই প্রবাহ সত্ত্বেও এখনও ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে চীন থেকে এগিয়ে জাপান, বিশ্বব্যাংক ও এডিবি।

বর্তমানে বাংলাদেশের মোট বার্ষিক ঋণের প্রায় ১০ শতাংশ চীন থেকে আসে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি শ্রীলংকার অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, সে দেশে অবকাঠামো প্রকল্পের জন্য চীনের কাছ থেকে বড় ঋণ নেওয়ার ফলে ঋণ মারাত্মক চাপ সৃষ্টি হয়।

ড. মনসুর বলেন, চীনা ঋণ ডলারে পরিশোধ করা হয়, যা ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার নিম্নমানের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চাপ বাড়ায়। এ চীনা ঋণ জনপ্রিয় নয়।

তবে ড. মনসুর চীনা ঋণের একটি ইতিবাচক দিকের কথা তুলে ধরেছেন। তিনি বলছেন, তাদের রাজনৈতিক সমঝোতার পরিবর্তে বাণিজ্য কৌশলের ক্ষেত্রে শ্রেণিবদ্ধ হওয়ার সুযোগ থাকছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে চীন ৬০ কোটি ডলার ঋণ দেয়, পরের বছর তা ২৪ কোটি ডলারে নেমে আসে। তবে ২০২১-২২ অর্থবছরে ঋণ দেওয়ার পরিমাণ ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডলার ছাড়িয়ে পরের বছর ১.১২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়।

চীন গত চার অর্থবছরে বাংলাদেশকে ২.৯৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে। ১৯৭৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত দিয়েছে ৭.৫ বিলিয়ন ডলার।

গত অর্থবছর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঋণদাতা ছিল বিশ্বব্যাংক, ১.৯৩ বিলিয়ন ডলার, দ্বিতীয় স্থানে জাপান, ১.৯ বিলিয়ন ডলার, এবং তৃতীয় স্থানে এডিবি, ১.৫৬ বিলিয়ন ডলার। আর ১.১২ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে চীন। সব মিলিয়ে গত অর্থবছরে বিভিন্ন ঋণদাতার কাছ থেকে বাংলাদেশ পেয়েছে ৯.২৬ বিলিয়ন ডলার।

ইআরডির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, চীনের মতো সাশ্রয়ী শর্তে অন্যান্য উৎস থেকে ঋণ পাওয়া চ্যালেঞ্জিং। বাংলাদেশের প্রতি বছর প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণের প্রয়োজন হয়, যেখানে বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও জাপানের মতো শীর্ষস্থানীয় বৈশ্বিক ঋণদাতারা প্রায় সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার সরবরাহ করতে পারে। সূত্র: ইউএনবি

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন