আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি পেয়েছে বাংলাদেশ, সঙ্গে আরও কিছু ঋণ
আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি ছাড় পেয়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার ছাড় হওয়া এ ঋণের পরিমাণ ১.১৫ বিলিয়ন ডলার। একই সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক ফর রিকনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইবিআরডি) ও ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি) থেকে আরও মোট ৯০ কোটি পেয়েছে বাংলাদেশ।
আইএমএফ, দক্ষিণ কোরিয়া, আইবিআরডি ও আইডিবি মিলিয়ে মোট ২.৫ বিলিয়ন (২০৫ কোটি) ডলার যোগ হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে। ফলে রিজার্ভ তহবিল গ্রস হিসাবে সাড়ে ২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বলেছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর এসব ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে যোগ হয়েছে।
গত সোমবার সংস্থাটির পর্ষদ সভায় এ ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়।
আইএমএফের ৪.৭০ বিলিয়ন (৪৭০ কোটি) ডলার ঋণের প্রথম কিস্তির সাড়ে ৪৭ কোটি ডলার আসে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে ৬৮ কোটি ডলার আসে গত বছরের ডিসেম্বরে।
বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ নানা কারণে কোভিড-পরবর্তী সময়ে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বড় ধরনের চাপের মুখে পড়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় (রিজার্ভ)। বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়ে ক্রমাগত চলতি হিসাবেও ঘাটতি বেড়েছিল। ডলারের বিপরীতে টাকার দর কমতে থাকলে প্রভাব পড়ে জ্বালানির দর ও আমদানিতে।
দ্রুত ক্ষয় হতে থাকা রিজার্ভ বাড়াতে বাংলাদেশ আইএমএফ থেকে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ চেয়ে আবেদন করে ২০২২ সালের জুলাইতে। বিভিন্ন ধাপে আলোচনার পর ওই বছর নভেম্বর ঋণ চুক্তি অনুমোদন করে সংস্থাটি।
চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট ৭টি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির পরবর্তীগুলোতে সমান অর্থ থাকার কথা ছিল। কিন্তু রিজার্ভ আরও কমে যাওয়ায় তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তিতে বেশি অর্থ চায় বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে বেশ কিছু কঠিন শর্তের বাস্তাবয়ন ও আগামীতে আরও বড় সংস্কার কার্যক্রমের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় সংস্থাটি তৃতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ডলারের পরিবর্তে ১১৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার দিতে সম্মত হয়। তবে মোট ঋণের পরিমাণ এবং মেয়াদ একই থাকবে।
বাংলাদেশের অনুরোধে চতুর্থ কিস্তির জন্য আগামী জুন শেষে নিট রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশশিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার কমিয়ে ১৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। অনেক শর্ত পূরণ করার পথে থাকলেও ঋণ কর্মসূচি শুরুর পর থেকে রিজার্ভের ত্রৈমাসিক কোনো লক্ষ্যমাত্রাই পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। সরকারের অনুরোধে আইএমএফ পরে সংশোধন করে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে দেয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৬ জুন রিজার্ভ স্থিতি ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস হিসাবে ২৪.৬২ বিলিয়ন ডলার। তবে আইএমএফ স্বীকৃত বিপিএম৬ পদ্ধতির গ্রস হিসাবে তা ছিল ১৯.৪৭ বিলিয়ন ডলার।