Logo
Logo
×

অর্থনীতি

ছুটছে নিত্যপণ্যের পাগলা ঘোড়া, পিষ্ট হচ্ছে সাধারণ মানুষ

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৪, ০২:৪৬ এএম

ছুটছে নিত্যপণ্যের পাগলা ঘোড়া, পিষ্ট হচ্ছে সাধারণ মানুষ

নিত্যপণ্যের দামে স্বস্তিতে নেই সাধারণ মানুষ। প্রতিদিনই তটস্থ থাকতে হচ্ছে নিম্ন থেকে মধ্য আয়ের মানুষকে। সাধারণ মানুষ বলছে, জীবন-যাত্রার সবগুলো খাতেই অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে খরচ। কিন্তু সেই তুলনায় আয় বাড়েনি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে আগের চেয়ে কমেছে। 

মঙ্গলবার সারাদেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের সবচেয়ে মাথা ব্যথার কারণ নিত্যপণ্যের দাম। সেই সঙ্গে বাচ্চাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবাসহ এমন কোনো খাত নেই যেখানে ব্যয় বাড়েনি। মূলত দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো রকম দু’বেলা পেটপুরে ভাত খাওয়াটাও এখন অনেকটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

রাজধানীর রায়েরবাগ এলাকার বাসিন্দা মো. রেজাউল করিম বলেন, বাজারে কিছুই কেনার সাধ্য নেই। দিন দিন জীবন চালানো যেন কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলের মৌসুমেও সন্তানদের কোনো ফল খাওয়াতে পারছেন না। এমন অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বাজারে দেশি সব ফলেরই দাম চড়া। ছেলে-মেয়েদের যে কিনে খাওয়াবো তা পারি না। অথচ বাচ্চারা তো আর সেটা বুঝবে না। এই অক্ষমতা লজ্জাজনক। 

মতিঝিল এলাকার বিভিন্ন অফিসে ঘুরে ঘুরে কফি বিক্রি করে সোহাগ নামের এক কিশোর। রাজধানীর শনিরআখাড়ায় তার বাসা। মা আর তিন ভাইবোন মিলে তাদের সংসার। বাবাহীন পরিবারে বাড়তি খরচ মেটাতে সোহাগ গত কয়েক মাস ধরে কফি বিক্রি করে আসছে। সে জানায়, বাজারে সবকিছুর অনেক দাম। তাই বাধ্য হয়েই পড়ালেখা ছেড়ে কাজ শুরু করেছি। এখন মায়ের হাতে কিছু টাকা দিতে পারছি। 

মিরপুরের একটি এজেন্ট ব্যাংক কর্মকর্তা খালেদ মির্জা জানান, মাসে ১৫ হাজার টাকার চাকরিতে ঢাকায় একা থাকাও দায় হয়ে পড়েছে। অথচ বছর খানেক আগেও এই টাকায় ভালোভাবে মাস চলে যেতো। এখন পারছি না। জানি না সামনের দিনগুলোতে অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। 

নিম্নআয়ের মানুষের যখন এই অবস্থা তখন ভালো নেই মধ্য আয়ের মানুষও। গাজীপুরে একটি বেসরকারি ফ্যাক্টরিতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা এসএমএএ মামুন। তিনি জানান, দিন যত সামনে আসছে, ততোই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হচ্ছে। সংসারে আয়-ইনকামে কোনো বরকত পাচ্ছি না। ঈদে পশু কোরবানি দিতে পারবো কি না এখনো বুঝতে পারছি না। 

এদিকে দেশের বাজার পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাওয়ায় শঙ্কা প্রকাশ করছেন অর্থনীতিবিদরাও। তারা বলছেন, মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যস্ফীতি দুটোই বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকার যে বাজেট প্রস্তাব করেছে তাতেও সঠিক কোনা নির্দেশনা নেই। সে কারণে এ পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের জন্য অবশ্যই উদ্বেগের কারণ। 

এ বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, দরিদ্রদের পাশাপাশি এখন নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তরাও মূল্যস্ফীতির সংকটে আছে। বাজেটে বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। তবে এর জন্য যে কর্মকৌশল লাগে, তা নেই। কর্মসংস্থানের সংকটে থাকা যুবকদের জন্য বাজেটে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন