বর্তমানে টকটাইম ও ইন্টারনেট সেবার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ আছে। এটি আরও ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এতে মোবাইলে কথা বলা ও ইন্টারনেটে খরচ বাড়ছে। মুঠোফোনে রিচার্জ করার সময় এই অর্থ কেটে রাখা হয়।
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় এ তথ্য জানিয়েছেন। এ প্রস্তাব তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হওয়ার কথা।
সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির ফলে মোবাইলে কথা বলা এবং ইন্টারনেট ব্যবহারে খরচ বাড়বে। উচ্চবিত্ত থেকে শুরু মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তদের কাছে মোবাইলে অতি প্রয়োজনীয় সেবা। কথা বলার পাশাপাশি ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ—এসব জীবনের অনুষঙ্গ হয়ে গেছে। ফলে এসব চালাতে খরচ আরও বাড়বে।
বর্তমানে প্রতি ১০০ টাকার টকটাইম পেতে হলে ১৩৩ টাকা ২৫ পয়সা রিচার্জ করতে হয়। নতুন প্রস্তাবের কারণে ১০০ টাকার টকটাইম পেতে ১৩৯ টাকা রিচার্জ করতে হবে। আরও সহজভাবে বলা যায়, ১০০ টাকা রিচার্জ করলে সরকার ২৮ টাকা শুল্ক-কর পাবে। বাকি অর্থের সমপরিমাণ টকটাইম পাবে গ্রাহক।
এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইলে কথা বলার ওপর প্রথমবারের মতো ৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। পরে তা একাধিক দফায় বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়।
এই খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সম্পূরক শুল্কহার বৃদ্ধি গ্রাহকের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা যখন কয়েক প্রান্তিক ধরেই কমছে। বাড়তি করের বোঝা এই নেতিবাচক প্রবণতাকে আরও বেগবান করবে। সার্বিকভাবে করহার বাড়িয়ে রাজস্ব বাড়ানোর উদ্দেশ্য সফল হবে না। কারণ, ব্যবহারকারীর ব্যয়ের পরিমাণ এতে কমে যাবে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন সূত্রে জানা গেছে, গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত মুঠোফোনের গ্রাহকসংখ্যা ছিল ১৯ কোটি ৩৭ লাখ। তবে এক ব্যক্তির একাধিক মুঠোফোনের হিসাবও এখানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। দেশে ১২ কোটি ৫১ রাখ মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়।
সিমকার্ড বিক্রির সময় এখন ২০০ টাকা মূসক দিতে হয়; এটি বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ হয়েছে, যা আগের বাজেটের চেয়ে মাত্র ৪.৭ শতাংশ বেশি। এর আগে সাধারণত বাজেটের আকার বৃদ্ধি পেত ৮ থেকে ১১ শতাংশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতি বছরই বাজেটের আকার তার আগের বাজেটকে ছাড়িয়ে যায়। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে না জেনেও শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় বারবার উচ্চাশা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। কিন্তু এবারই প্রথম সেই ধারা পরিবর্তন হলো।