নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমাকে নানাভাবে টানাহেঁচড়ার মধ্যে রাখা হচ্ছে। নতুন কিছু করতে পারলে অন্য দেশের মানুষরা বলত এটা বাংলাদেশ থেকে আমরা শিখেছি। সেই সুযোগটা হলো না, এটাই দুঃখের বিষয়। এই দুঃখ থেকে যেন আমি মুক্তি পেতে পারি, সেজন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) ঢাকার শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। বেলা ১১টার দিকে কাকরাইলে অবস্থিত শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে জামিন নিতে যান শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ৬ মাসের সাজাপ্রাপ্ত ড. ইউনূস। এদিন ড. ইউনূসের জামিন আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। জামিন আবেদন শেষে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, 'আমাদের কাজ করতে না পারার কারণে মানুষ যে বঞ্চিত হলো, কাজগুলো যে করতে পারলাম না, সেটার জন্য কষ্ট লাগে। আমরা যে কাজ করি, সেটাতে পৃথিবীর মানুষ আগ্রহী। তারা জানতে চায়। তারা এটা গ্রহণ করে। আমরা তো আর এমন না যে বিরাট কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে বিদেশে যাব।'
ড. ইউনূস বলেন, 'আমরা শুধু পরামর্শ দিচ্ছি। মানুষকে অনুপ্রেরণা দেওয়ার চেষ্টা করি কাজ করার জন্য। আমার কাছে ভালো লাগে। এই অনুপ্রেরণায় অনেক মানুষ সাড়া দেয়। সাধারণ মানুষ সাড়া দেয়, তরুণরা সাড়া দিচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণরা সাড়া দেয়, ছোট ব্যবসায়ী সাড়া দেয়, দুনিয়ার বড় বড় ঝানু ব্যবসায়ী, বহু ধনী ব্যক্তি— তারাও সাড়া দেয়।'
'আমাদের তো কোনো ক্ষমতা নেই তাদের বাধ্য করার। তারা নিজেরাই সাড়া দেয়। তারা নিজেরাই এগিয়ে আসে। এটাই ভালো লাগে এবং ভালো লাগে যে এটা বাংলাদেশ থেকে আসা একটা আইডিয়া, একটা কনসেপ্ট, এত কর্মকাণ্ড পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় অতি আগ্রহের সঙ্গে সেটা দেখেছে', বলেন তিনি
ড. ইউনূস বলেন, 'দেশের মানুষের মনে আত্মবিশ্বাস জাগে যে, আমরা একটা ফেলনা জাতি না। আমরা এমন একটা জাতি, যে দুনিয়ার সামনে একটা নমুনা নিয়ে আসতে পেরেছে, যা মানুষের কাজে লাগে, মানুষ সেটা গ্রহণ করে। কিছু কিছু জিনিস আমার কাছে অদ্ভুত লাগে। কোনোদিন চিন্তা করিনি যে এরকম একটা কাজের সঙ্গে জড়িত হতে পারব।'