Logo
Logo
×

অর্থনীতি

নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন

গরিবের জন্য ‘মাছ-মাংস হারাম’

Icon

ঢাকা অফিস

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৪, ১০:৩০ পিএম

গরিবের জন্য ‘মাছ-মাংস হারাম’

লাগামহীন পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটছে নিত্যপণ্যের বাজার। নিত্যপণ্যের আগুনে পুড়ছে ক্রেতা। প্রতিদিনই বাড়ছে প্রায় সব পণ্যের দাম। চাল-ডাল থেকে শুরু করে, মাছ-মাংস, তরিতরকারি সবকিছুই যেন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। বাজারের এমন নাজুক অবস্থায় কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না সরকার। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মালিবাগ, খিলগাঁও, রামপুরাসহ বেশ কয়েকটি বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, মাছ-মাংস, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম চড়া। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব পণ্যেই কেজিতে দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। 

এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি অস্থির ডিম ও মুরগির বাজার। বাজারে গড়ে ওঠা অবৈধ সিন্ডিকেট সারাদেশের কোল্ডস্টোরেজে ডিম মজুদ রাখায় সপ্তাহের ব্যবধানে ডজন প্রতি ডিমের দাম বেড়েছে ২৫ টাকা। এছাড়া ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে  ৫০ টাকা।  

বিক্রেতারা বলছেন, তীব্র গরম ও বৃষ্টিপাত না হওয়ায় শাক-সবজির উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সেইসঙ্গে ডিম অনেকেই অবৈধভাবে গুদামজাত করায় কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া গরমে খামারগুলোতে মুরগি মারা যাচ্ছে। রোজার আগেই এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়। রোজার পরেও তা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। 

মধ্যম মানের একটি চাকরি করে পূর্ব রামপুরায় চার সদস্যের সংসার পেতেছে সেলিম শেখ নামের এক যুবক। বৃহস্পতিবার কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বাংলা আউটলুককে বলেন, বাজারের যে অবস্থা তাতে আমাদের মতো মানুষের জন্য মাছ-মাংস হারাম। বাজারে গিয়ে কি কিনবো আর কি কিনবো না সেই সিদ্ধান্ত নিতেই চিন্তায় পড়ে যেতে হয়। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। এমন নিয়ন্ত্রণহীন বাজার পৃথিবীর আর কোনো দেশে আছে আমার জানা নেই। সত্যিই সংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। 

রামপুরা বাজারে বৃহস্পতিবার প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০, সাদা ডিম ১৩৫-১৪০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ২৪০, সোনালি মুরগী প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা। এছাড়া দাম বেড়েছে গরিবের তেলাপিয়া, পাঙ্গাসসহ সব ধরনের মাছেরও। প্রতি কেজি তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০-২২০ টাকা, চাষের শিং ৫০০ টাকা, চাষের মাগুর ৫৫০ টাকা ও চাষের কৈ বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকায়। আর আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, কোরাল ৭৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা ও আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজির বাজারেও আগুন। প্রতিকেজি বেগুন ৬০-৯০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পেঁপে ৮০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৬০ টাকা ও কহি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ধুন্দল ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, আলু ৫০-৫৫ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা ও কাঁকরোল ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচেরও। পাইকারি পর্যায়ে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি পিস লাউ ৬০ টাকা ও চালকুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। শাকের আঁটি ছোটো হয়ে আসলেও দাম চড়েছে তারও। 

রাজধানীর কারওয়ানবাজারের মাছ বিক্রেতা হেদায়েত হোসেন জানান, চলতি বছরে এখনো তেমন কোনো বৃষ্টিপাত নেই। সে কারণে দেশি মাছের আকাল চলছে। চাষের মাছও এ বছর সেই তুলনায় বাড়বে না। ফলে মাছের দাম বাড়ছে বলেও জানান তিনি। 

এদিকে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বাজারে দাম বেড়েছে আদা, রসুন ও পেঁয়াজের। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। আর কেজিতে ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতি কেজি দেশি রসুন ১৮০-২০০ টাকায় ও আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। আদা আগের বাড়তি দামেই ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে মাংসও। প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতিকেজি খাসির মাংস ১১৫০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন