Logo
Logo
×

অর্থনীতি

ভয়ঙ্কর সিন্ডিকেটের কবলে ডিমের বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ১২:৫৬ এএম

ভয়ঙ্কর সিন্ডিকেটের কবলে ডিমের বাজার

ফাইল ছবি

বেশ কিছুদিন স্থির থাকার পর ফের অস্থির ডিমের বাজার। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহে ঘাটতি না থাকলেও চারদিনের ব্যবধানে ডজন প্রতি ডিমের দাম বেড়েছে ২০ টাকা। 

গত বৃহস্পতিবার প্রতি ডজন ডিমের দাম ছিল ১২০ টাকা। চারদিনের ব্যবধানে ডজনে ২০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। প্রতিটি ডিমের খুচরা দাম পড়ছে ১০ টাকা থেকে ১২ টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে তেজগাঁও আড়ত। এই আড়ত থেকেই এসএমএসের মাধ্যমে সারাদেশে ডিমের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। তারা তিন দিন পর পর খামারিদের কাছ থেকে ডিম কেনেন। সে ক্ষেত্রে এসএমসের মাধ্যমে ঘোষিত মূল্যের চেয়েও এক টাকা কমে খামারিদের কাছ থেকে ডিম কেনেন আড়তদাররা। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই বাজারের ব্যবসায়ীরাই দাদন দিয়ে খামারিদের জিম্মি করে কম দামে ডিম বিক্রি করতে বাধ্য করেন। প্রতি তিন দিন পর পঞ্চম দিনে গিয়ে খামারিদের কাছ থেকে ডিম কেনার আগের দিন ডিমের বিক্রি রেট কমিয়ে দেওয়া হয়। ডিম কেনার পর আবার বাড়িয়ে দেওয়া হয় রেট।  

রাজধানীতে ডিমের বড় দুটি পাইকারি বাজার আছে। এর একটি কারওয়ান বাজারসংলগ্ন তেজগাঁও রেলস্টেশন পাইকারি ডিমের বাজার। অন্যটি পুরান ঢাকার কাপ্তানবাজার।

এই দুই বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি, গেলো কয়েক দিন ধরে দেশব্যাপী তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে সম্প্রতি ডিমের বাজারে তার প্রভাব পড়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে কোল্ড স্টোরেজে বিপুল পরিমাণে ডিম মজুদ করে রাখায় কৃত্রিম সঙ্কটও সৃষ্টি হয়েছে ডিমের বাজারে। এসব মজুদ সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে ইতোমধ্যে অভিযানও চালিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। 

সোমবার কিশোরগঞ্জের একটি কোল্ড স্টোরেজে অভিযান চালিয়ে ২৮ লাখ পিস ডিম উদ্ধার করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিশোরগঞ্জের মতো দেশের বিভিন্ন স্থানেই ডিমের এমন অবৈধ মজুদ রয়েছে। এই সিন্ডিকেটই মূলত ডিমের বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে ফায়দা লুটে থাকে। 

তেজগাঁও ডিমের আড়তে আশিক এন্টারপ্রাইজ ও আলামিন ট্রেডার্সের কাছে ডিম সরবরাহ করে ময়মনসিংহের ভালুকার তোয়া পোল্ট্রি ফিড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতি দিন প্রায় পৌনে এক লাখ পিস ডিম বিক্রি করে থাকে তারা। এ প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার শরীফ আহমেদ বাংলা আউটলুককে জানান, বর্তমানে ডিমের বাজার চড়া। কোল্ড স্টোরেজগুলোর ডিম বিক্রি শেষ হওয়ার কারণে এখন ডিমের বাজারে টান পড়েছে যে কারণে বাজার চড়া। 

তবে ডিমের বাজারের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ তেজগাঁও আড়তের হাতে বলে অভিযোগ করছেন এ খাত সংশ্লিষ্ট একটি পক্ষ। তৃণমূলের পোল্ট্রি শিল্প নিয়ে কাজ করা এই পক্ষটি বলছে, এই আড়তের গুটি কয় ব্যবসায়ীই মূলত সারা দেশের ডিমের বাজার নির্ধারণ করে থাকে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নিলে বাজার স্থিতিশীল হবে না। 

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, সারাদেশে তারা (তেজগাঁও আড়ত মালিকরা) ডিমের দাম নির্ধারণ করে। হুট করে তারা দাম কমিয়ে দিয়ে খামারিদের থেকে ডিম নিয়ে হিমাগারে সংরক্ষণ করে, এরপর আবার দাম বাড়িয়ে মুনাফা করে।

তিনি বলেন, ওই আড়তে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ লাখ ডিম বিক্রি হলেও তারা সারাদেশে চার কোটি ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিদিন তারা বাজারদর জানিয়ে দেয় সারাদেশের বিক্রেতা এবং খামারিদের। তারা এখন ডিমের বাজারে সবচেয়ে বড় সিন্ডিকেট।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে তেজগাঁও বাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আমান উল্লাহ বাংলা আউটলুককে বলেন, কোনো সিন্ডিকেট নয় বরং চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণেই ডিমের দাম বেড়েছে। গেল কয়েকদিন ভীষণ গরম ছিলো। অনেক মুরগী মারা গেছে। সে কারণে যোগান কমে গেছে। এখন আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়েছে। স্কুল-কলেজ খুলেছে। ডিমের চাহিদাও বেড়েছে। সে কারণে দাম একটু চড়া।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন