Logo
Logo
×

কূটনীতি

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে বৈশ্বিক ঐকমত্য জরুরি: ড. খলিলুর রহমান

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৮ পিএম

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে বৈশ্বিক ঐকমত্য জরুরি: ড. খলিলুর রহমান

বাংলাদেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনে বৈশ্বিক ঐকমত্য জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান। একইসঙ্গে তিনি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বলিষ্ঠ সহযোগিতা কামনা করেন। 

কাতারের দোহায় শেরাটন হোটেলে চলমান দোহা ফোরামে  'ক্রসরোডে বাংলাদেশ: শাসন ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং শেখ হাসিনা পরবর্তী গতিপথ' শীর্ষক সেশনে তিনি এসব কথা বলেন। দোহা ফোরামের দ্বিতীয় দিনে এই সেশনের শুরুতে দোহা ফোরামে প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণের পরিপ্রেক্ষিতে আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে প্রেরিত ৬ মিনিটের তাঁর একটি ভিডিও মেসেজ প্রচার করা হয়। এ সেশনে কাতারের উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত প্রতিমন্ত্রী যোগদান করেন। 

এ সেশনে লন্ডনভিত্তিক জাগরণ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শরীফ বান্নার সঞ্চালনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক সাজিদ মাহমুদ, সোয়াস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অধ্যাপক নাওমি হোসেন, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সিনথিয়া ফরিদ, ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড গভর্নেন্সের চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনির খসরু প্রমুখ প্যানেল বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন। 

উপস্থিত ছিলেন দোহা ফোরামে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিবর্গ, কাতার প্রবাসী বাংলাদেশি সমাজের গুরুত্বপূর্ণ  ব্যক্তিত্ব, কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম, দূতাবাসের কর্মকর্তা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম এশিয়া অণুবিভাগের মহাপরিচালক মো. শফিকুর রহমান।  

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. খলিলুর রহমান বলেন, প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে শুধু মানবতার কারণে শত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ গত সাত বছর ধরে আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের অধিকতর সহায়তা ছাড়া বাংলাদেশের পক্ষে এটি অব্যাহত রাখা খুবই কঠিন হয়ে পড়ছে। দ্রুততার সাথে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে বৈশ্বিক ঐকমত্য গঠনে জোর দিচ্ছি। রোহিঙ্গা বিষয়ে আগামী বছর জাতিসংঘের একটি বিশেষ সম্মেলন হবে। আশা করছি, এ সম্মেলনের মাধ্যমে সকল অংশীজনের সহায়তায়  রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনে সহায়ক হবে। 

প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেনটেটিভ বক্তব্যে বাংলাদেশে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দমনে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকার কীভাবে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে ও হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে গুলি করে আহত করেছে, পঙ্গু করেছে, অন্ধ করে দিয়েছে তা তুলে ধরেন।

বিগত শতাব্দী ধরে বাঙালি মুসলিম জাতিসত্তার উন্মেষের ইতিহাস পর্যালোচনাপূর্বক ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন, পাকিস্তান আন্দোলন, ভাষা আন্দোলনসহ স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় এবং স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়ার প্রেক্ষিতে জাতি বার বার প্রতারিত হয়েছেন মর্মে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট বৈপ্লবিক গণ-অভ্যুত্থানের ফলে বাংলাদেশের সামনে এই প্রতারণা থেকে মুক্তি এবং  গণতন্ত্র ও সাম্যের ভিত্তিতে দেশ গড়ার অপার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। রাষ্ট্র ব্যবস্থার সংস্কারের মাধ্যমে সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। একজন কৃষক, শ্রমজীবী  বা প্রান্তিক মানুষের সন্তান যখন দেশ পরিচালনার স্বপ্ন দেখতে পাবেন বা সে সুযোগ তৈরি হবে- তখন আমরা বলতে পারব ভাল কাজ হয়েছে, ভাল সংস্কার হয়েছে। সে লক্ষ্যেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ-ভারত প্রসঙ্গে ড. খলিলুর বলেন, আমরা প্রতিদিন সংঘবদ্ধ  মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অপপ্রচারের শিকার হচ্ছি। ফ্যাসিবাদ থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের এই ঐতিহাসিক সময়ে ভারতের নিকট থেকে অধিক বেশি দায়িত্বশীল ও প্রতিবেশীসুলভ সহযোগিতা পাওয়ার  প্রত্যাশা করি। আমার আশা দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিবের আসন্ন বৈঠকে পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে সম্পর্ককে উন্নত পর্যায়ে নেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। 

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন