Logo
Logo
×

কূটনীতি

তিস্তা প্রকল্প ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে করতেও রাজি চীন, ইঙ্গিত রাষ্ট্রদূতের

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০১:০৪ পিএম

তিস্তা প্রকল্প ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে করতেও রাজি চীন, ইঙ্গিত রাষ্ট্রদূতের

তিস্তা নদীতে প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সিদ্ধান্তকে চীন সম্মান জানাবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। এছাড়া ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়নেও চীন রাজি বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন রাষ্ট্রদূত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফর নিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ডিক্যাবের অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ডিক্যাব প্রেসিডেন্ট নূরুল ইসলাম হাসিব ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অপু।

প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর বিভিন্ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি নতুন রূপরেখা দেবে এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে দুই দেশের অবস্থানের সমন্বয় করার সুযোগ দেবে বলে আশা ব্যক্ত করেন চীনা রাষ্ট্রদূত।

ইয়াও ওয়েন বলেন, তিস্তা বাংলাদেশের নদী। এতে প্রকল্প নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশই নেবে। চীন সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাবে। এই মুহূর্তে আমি এটাই বলতে পা‌রি।

রাষ্ট্রদূত বলেন, তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করতে চীনের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ফি‌জিবিলিটি স্টা‌ডি করার কথা বলেছে। এখন প্রস্তাব গ্রহণ করার বিষয় বাংলাদেশের।

ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে দেশটিত রাষ্ট্রদূত বলেন, 'আমরা প্রস্তুত এবং দরজা খোলা। সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের।'

রাষ্ট্রদূত বলেন, ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের মানবিক চেতনার ভূয়সী প্রশংসা করে চীন। চীন যুদ্ধবিরতি ও সংলাপের জন্য মিয়ানমার সংঘাতে জড়িত সব পক্ষকে সক্রিয়ভাবে চাপ দিচ্ছে। এভাবে দেশটি শরণার্থীদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের পথ প্রশস্ত করছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত।

ইয়াও বলেন, ‘বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে চীন। পাশাপাশি যৌথভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর বৈধ অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার উন্নয়নে কাজ করতে আগ্রহী চীন।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন সফরে শিক্ষা, গণমাধ্যম, অবকাঠামো, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ, বাংলাদেশ থেকে কৃষি আমদানি এবং ডিজিটাল ইকোনমির মতো খাতে সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক বর্তমানে সবচেয়ে ভালো অবস্থায় আছে এবং উন্নয়নেরও অনেক সুযোগ রয়েছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আগামী বছর বাংলাদেশ ও চীন কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করবে। কীভাবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও বাড়ানো যায়, বিনিময়ের পরিধি বাড়ানো যায়, সহযোগিতার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যায় এবং দুই দেশ ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও ভালো, গভীর ও ঘনিষ্ঠ করা যায় সে বিষয়ে উভয় পক্ষেরই চেষ্টার প্রয়োজন রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে এবং অতীতের অর্জনগুলোর ওপর ভিত্তি করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এই সফর নিঃসন্দেহে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। পাশাপাশি চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদারিত্বে নতুন সাফল্য এনে দেবে এবং সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করবে।’

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফর সবার কাছে বহুল প্রত্যাশিত। ‘এই সফর আগামী পাঁচ বছর বা তারও বেশি সময় চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী ৮ জুলাই সকালে ঢাকা থেকে বেইজিংয়ের উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী। ৯ জুলাই তিনি বেইজিংয়ে বিজনেস ফোরামে বক্তব্য দেবেন। পরদিন ১০ জুলাই চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনা নেতাদের সঙ্গে বৈঠক, বেশ কয়েকটি সহযোগিতা দলিল সই এবং যৌথভাবে বড় ধরনের সহযোগিতার বিষয়ে ঘোষণা দেবেন। এই সফরের মাধ্যমে উভয় পক্ষ দৃঢ়ভাবে একে-অপরকে সমর্থন করবে এবং সব ক্ষেত্রে যোগাযোগ আরও গভীর হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রদূত।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন