Logo
Logo
×

কূটনীতি

এবার সমুদ্রে ভারতের পাশে রাশিয়া

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ০৮:৫৮ এএম

এবার সমুদ্রে ভারতের পাশে রাশিয়া

সমুদ্রে চীনের অব্যাহত হুমকির মুখে কয়েক দিন আগেই ভারতকে অত্যাধুনিক ট্রাইটন দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই যান পানির নিচে ও ওপরে সব ধরনের হামলা মোকাবিলায় এবং বিদেশি নজরদারি ঠেকাতে ভারতকে সহযোগিতা করবে। 

এবার সমুদ্রে রাশিয়াকেও সঙ্গে পাচ্ছে ভারত।

ভারতের সাথে লজিস্টিক চুক্তির খসড়া অনুমোদন করেছে রাশিয়া। চুক্তিটি কয়েক বছর ধরে ঝুলে ছিল। চুক্তি অনুযায়ী সামরিক অনুশীলন, প্রশিক্ষণ, পোর্ট কল, দুর্যোগে ত্রাণ ও বিশেষ করে আর্কটিক সাগরে রাশিয়ান সামরিক সুবিধাগুলি সহজে নিতে পারবে ভারত।

চুক্তিটি দুই দেশে সামরিক সুবিধা বিনিময়কে সহজ করবে। ২০১৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে শুরু করার পর ভারত বেশ কয়েকটি দেশের সাথে এমন চুক্তি করেছে।

গত ২০ জুন অফিসিয়াল আদেশ রাশিয়ার সরকারি আইনি তথ্য ওয়েবসাইটে এ খবর প্রকাশিত হয়। সম্ভাব্য এই চুক্তি সম্পর্কে রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্টিন বলেন, ‘এটি একটি রাশিয়ান সরকারি ডিক্রি যা চুক্তিতে স্বাক্ষর করার অনুমোদন দিয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রাসঙ্গিক নির্দেশ দিয়েছে।’

ভারতীয় নৌবাহিনী বিভিন্ন দেশের সাথে স্বাক্ষরিত এই প্রশাসনিক ব্যবস্থাগুলিতে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছে। এটি সমুদ্রে ভারতের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। অন্য যেসব দেশের সঙ্গে ভারত এই চুক্তি করেছে তাদের মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ফ্রান্স, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভিয়েতনাম।

দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরের অপেক্ষায়

রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের আরও চুক্তি স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে। সেই চুক্তি হলে আমেরিকা ভারতের চোখ রাঙাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। আনন্দবাজার সংবাদমাধ্যম সূত্রে বলছে, ভারত ও রাশিয়া খুব শিগগিই একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করতে চলেছে। এই চুক্তির হলে দুই দেশ পারস্পরিক সামরিক সহযোগিতা উপভোগ করবে।

ভারত ও রাশিয়ার বন্ধুত্ব সব সময়ই বিশ্ব কূটনৈতিক মহলের আলোচনার বিষয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে একে অপরের উপর নির্ভরশীল তারা। রাশিয়া থেকে ভারত অস্ত্র, তেল প্রভৃতি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানি করে। বিশ্বমঞ্চের বিভিন্ন ইস্যুতেও ভারত বারবার রাশিয়ার পাশে থেকেছে। ইউক্রেনে হামলার ইস্যুতে পশ্চিমারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নানা রকম কঠিন পদক্ষেপ নিলেও ভারত রাশিয়ার বিরুদ্ধে টুঁ শব্দটি করেনি।

দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ফলে ভারত বা রাশিয়া কী সুবিধা পাবে?

ভারতীয় জলসীমা ব্যবহারে বাধা থাকবে না রাশিয়ার। আরব সাগর হোক বা ভারত মহাসাগর, কিংবা বঙ্গোপসাগর—রাশিয়া সব জায়গাতেই যেতে পারবে। মানে আধিপত্য বিস্তার করতে পারবে। এত দিন ভারত মহাসাগরে রাশিয়ার তেমন উপস্থিতি ছিল না। ওই পথে কোনো জাহাজ চালাতে পারত না। বর্তমান পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে রাশিয়া ভারত মহাসাগরে আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। সুদানের সঙ্গে রাশিয়ার সামরিক সহযোগিতা চুক্তি রয়েছে। ফলে লোহিত সাগরে আধিপত্য বজায় রাখতে পারছে রাশিয়া। কিন্তু শুধু ওইটুকু অংশে থাকতে চায় না রাশিয়া।

ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে রাশিয়া বিশ্ববাজারে বড় ধাক্কা খেয়েছে। অন্যান্য দেশে রাশিয়ার যা সম্পদ মজুদ আছে তা তারা জব্দ করে রেখেছে। সেগুলি ব্যবহার করতে না পারায় সমস্যায় পড়েছে রাশিয়া। চাপে রয়েছে সামগ্রি অর্থনীতি। এ অবস্থায় ভারত মহাসাগরে উপস্থিতির জানান দেওয়া রাশিয়ার একটি বড় প্রাপ্তি। এখন থেকে এ পথে যেমন ব্যবসা চালাতে পারবে রাশিয়া তেমনই সেখানে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করতে পারবে। বিভিন্ন দিকে নজরদারি চালাতে পারবে শত্রুদের ওপর।

চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া

রাশিয়ার সাথে চুক্তি করায় ভারতের ওপর ক্ষুব্ধ হতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র—এমন মনে করছেন অনেক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ। কারণ রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চিরশত্রু। বিষয়টি ভারতীয় কূটনীতিকরা কিভাবে সামাল দেবেন অথবা আমেরিকা বিষয়টি কিভাবে নেবে সেই নীতি এখনও প্রকাশ্যে আসেনি।

অপরদিকে রাশিয়ার বন্ধু চীন। ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়াকে প্রকাশ্যে নানা রকম সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে চীন। সেই রাশিয়া এখন চীনের প্রবল প্রতিপক্ষ ভারতের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াল। বিষয়টি চীন কিভাবে দেখছে এবং রাশিয়া তা কিভাবে সামাল দেবে সে বিষয়ে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।

রাশিয়া যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে বিস্তারিত আলোচনার জন্য জুলাইয়ের শুরুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মস্কো যাচ্ছেন বলে খবর এসেছে। মঙ্গলবার বিভিন্ন কূটনৈতিক সূত্র এ খবর জানিয়েছে। প্রেসিডেন্ট পুতিনের সহকারী ইউরি উশাকভ বলেছেন, ‘আমরা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে এখনও তারিখ ঠিক হয়নি।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আবারও জোর দিয়ে বলছি, এই সফর হবে।’ কূটনৈতিক সূত্রগুলি জানিয়েছে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরের দিনটি আগামী 8 জুলাইয়ের কাছাকাছি পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরে দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বের সর্বোচ্চ প্রাতিষ্ঠানিক সংলাপ হবে বলে উভয় পক্ষ আশা করছে। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস, ইকোনমিক টাইমস, আনন্দবাজার

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন