বাগেরহাটে সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করছেন না কৃষকরা

বাগেরহাটে এবছর আমন ধানের উৎপাদন ভালো হলেও সরকারি খাদ্যগুদামে এক ছটাকও ধান জমা হয়নি। কৃষকরা হাট-বাজারে বেশি দামে ধান বিক্রির সুযোগ পাওয়ায় সরকার নির্ধারিত দামে (প্রতি মণ ১,৩২০ টাকা) ধান বিক্রি করতে আগ্রহী হননি। বাজারে প্রতি মণ ধান ১,৪০০-১,৪২০ টাকায় বিক্রি হওয়ায় কৃষকরা বেশি লাভের আশায় খোলা বাজারেই ধান বিক্রি করেছেন।
এছাড়া সরকারি গুদামে ধান বিক্রির প্রক্রিয়া কঠিন হওয়ায় কৃষকরা এতে আগ্রহ দেখাননি। নিয়ম অনুযায়ী কৃষকদের কৃষি কার্ড বা আইডি কার্ড থাকতে হয়, অনুমোদন নিতে হয়, নির্ধারিত আর্দ্রতা (১৪%) মানতে হয়—এসব ঝামেলায় অনেকে আগ্রহ হারিয়েছেন। সিন্ডিকেট ও মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে কৃষকদের কাছে সরকারি গুদাম বিকল্প হিসাবে প্রতিযোগিতামূলক মনে হয়নি।
সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি
২০২৪-২৫ মৌসুমে ৩,৯০২ টন আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এখনো কিছুই সংগ্রহ হয়নি। তবে চালের সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার ৯২% পূরণ হয়েছে। জেলার ৯ উপজেলায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, নিয়ম-কানুন সহজ না হলে ভবিষ্যতেও তারা সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করবেন না।
কৃষকদের প্রতিক্রিয়া
কৃষক সাইফুর রহমান ও তরুণ কুমার জানান, সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করা কঠিন এবং কম মূল্যে বিক্রি করতে হবে বলে তারা আগ্রহী নন। অনেক কৃষক জানান, তারা সরকারি ধান ক্রয়ের বিষয়টি জানতেন না বা গুদামে ধান দেওয়ার আগ্রহ হারিয়েছেন।
কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ
খাদ্য ও কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারি সংগ্রহ মূল্য বাড়ানো ও কৃষকদের বাড়ি গিয়ে ধান কেনার ব্যবস্থা করা উচিত। তবে বাজার দরের তুলনায় সরকার নির্ধারিত মূল্য কম থাকায় শেষ পর্যন্ত এ বছর সরকারি গুদামে ধান সংগ্রহ না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।