কুয়েটের ১০ শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার, ৩ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:২৩ পিএম

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ড. এম এ রশিদ হলে ইসিই বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমানকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনায় কুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ ১০ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া ৩ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দেওয়া হয়েছে। কুয়েটের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কুয়েটের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সুলতান মাহমুদ বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সকল শিক্ষার্থীকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
জানা যায়, ২০২২ সালে ১১ সেপ্টেম্বর রাতে ড. এম এ রশিদ হলের ১১৫ নম্বর রুম ও গেস্ট হাউসে পৃথকভাবে শিবির সন্দেহে জাহিদুর রহমানের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এই অমানবিক নির্যাতনের পর জাহিদুর রহমানকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পাশাপাশি তৎকালীন হলের প্রোভোস্ট জাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বছর ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও সুপারিশের ভিত্তিতে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটি গত ২৭ জানুয়ারি এ সিদ্ধান্ত নেয়।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন— কুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাদমান নাহিয়ান সেজান লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রায়হান আহমেদ, সাদ আহমেদ তূর্য, আদনান রাফি ও রিজুয়ান ইসলাম রিজভী, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাজেদুল কবির, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ফুয়াদুজ্জামান ফাহিম, রশিদ হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান মিঠু ও মো. সাফাত মোরশেদ এবং রশিদ হল ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বিইসিএম বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ফখরুল ইসলাম ফারিসকে পাঁচ বছরের জন্য সনদ প্রদান না করা এবং চিরতরে প্রশংসা পত্র দেওয়া যাবে না মর্মে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এছাড়া লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোস্তাক আহমেদ তুষারকে তিন বছরের জন্য সনদ না দেওয়া এবং চিরতরে প্রশংসা পত্র না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সুভেন্দ দাস এবং ফারিয়ার জামিল নিহালকে তিন বছরের জন্য সনদ না দেয়াসহ চিরতরে প্রশংসাপত্র না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়াও পরীক্ষার সময় অসৎ উপায় অবলম্বন করার জন্য একই সভায় ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ মোহাম্মদ রায়হানকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।