আসামির স্ত্রীকে রাত যাপনের অনৈতিক প্রস্তাব, জেলারকে শাস্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৪, ০৭:১৭ পিএম
কারাগারে থাকা কয়েদির সঙ্গে স্ত্রীকে দেখা করিয়ে দেওয়ার কথা বলে ভিডিওকলের মাধ্যমে অশোভনীয় আলোচনা ও অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারের জেলার মো. আক্তার হোসেন শেখকে 'লঘুদণ্ড' দিয়েছে সরকার। তাকে দুই বছরের জন্য দুটি বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখার দণ্ড প্রদান করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মশিউর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ শাস্তির কথা জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মো. আক্তার হোসেন শেখ ২০২২ সালের ১২ জুন থেকে ২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঝালকাঠি জেলা কারাগারে জেলার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০২৩ সালের ৩০ জুলাই ঝালকাঠি জেলা কারাগারে হাজতি মামুনুর রশিদের (বন্দি নম্বর ১৫৮/২৩) স্ত্রীর সঙ্গে জেলারের সরকারি মোবাইল নম্বর থেকে ফোনে কথা বলার ব্যবস্থা করে দেন।
এরপর কয়েদির স্ত্রীর ব্যক্তিগত নম্বরে নিয়মিতভাবে কথা বলতে শুরু করে অভিযুক্ত জেলার আক্তার হোসেন। কয়েদির স্ত্রীকে তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ভিডিওকলের মাধ্যমে অশোভনীয় আলোচনা করেন জেলার আক্তার হোসেন।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, কয়েদির স্ত্রীর সঙ্গে বসতঘরে রাত-যাপনের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন জেলার আক্তার হোসেন শেখ। আসামির স্ত্রী এসকল অনৈতিক কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে দেবেন না এবং তার স্বামীকে জেলখানায় কষ্ট দেবেন বলে আসামির স্ত্রীকে ভয়-ভীতি দেখান।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, এমন আচরণের জন্য সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩ (খ) বিধি মোতাবেক জেলার আক্তার হোসেন শেখ অসদাচরণের দায়ে অভিযুক্ত করে বিভাগীয় মামলার অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী প্রেরণ করা হয়। অভিযোগনামার জবাব প্রদান করেন অভিযুক্ত জেলার মো. আক্তার হোসেন শেখ এবং ব্যক্তিগত শুনানির জন্য প্রার্থনা করেন।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, তবে অভিযোগনামার জবাব সন্তোষজনক বিবেচিত না হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৭(২) (ঘ) বিধিমতে অভিযোগ তদন্তের জন্য গত চলতি বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপসচিব মো. কামরুজজামাকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা গত গত ১৫ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আক্তার হোসেন ও বন্দির স্ত্রীর অডিও, ভিডিও কথোপকথনের কণ্ঠ প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয় যা অসদাচরণের শামিল। আক্তার হোসেন শেখের বিরুদ্ধে আনীত সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩ (খ) বিধি অনুযায়ী অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় একই বিধিমালার ৪ (২) (খ) অনুযায়ী দুই বছরের জন্য দুটি বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখার দণ্ড প্রদান করা হলো।