ডেমরার শামসুল হক খান স্কুলের বৈষম্য নিয়ে শিক্ষকের ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৪২ পিএম
রাজধানীর ডেমরার শামসুল হক খান স্কুলের বৈষম্য নিয়ে এক শিক্ষকের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে তোলপাড় চলছে। ৫ আগস্টের বিপ্লব পরবর্তী সংস্কার কর্মসূচির অংশ হিসেবে ওই স্কুলের শিক্ষকদের কোচিং বন্ধ করে দেওয়ার পর এক শিক্ষক তার আর্থিক দুরবস্থা নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি তার বেতন, স্কুলের আয়ের মধ্যে ব্যাপক বৈষম্যের একটি তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন।
দেশের ছাত্রসমাজকে উদ্দেশ্য করে তিনি তার পোস্টে লেখেন, “প্রিয় সন্তানতুল্য Gen-Z ছাত্রছাত্রীরা, বাধ্যতামূলক কোচিং তো বন্ধ করলে। এবার আমাদের ন্যায্য বেতন ভাতা আদায় করে দিতে পারবে তো?
অনার্স মাস্টার্স করে জয়েনিং এ বেতন পাই মাত্র ৮ হাজার। ১২ বছরে আমার বেতন বেড়ে এখন ১৮ হাজার। অথচ ভালো স্কুলে সরকারি নিয়মে জয়েনিং এ মিনিমাম ২২ হাজার পাওয়া যায় আর ১২ বছর চাকরি করলে তা ৫০ হাজার হয়ে যায়। আমাদের ন্যায্য বেতন ভাতা আদায়ে কতটুকু আন্দোলন করবে?
স্কুলে বর্তমানে টিচার স্টাফ মিলিয়ে প্রায় ৩০০ জন। এভারেজে ১৫ হাজার করে বেতন ধরলে খরচ হয় ৩০০×১৫,০০০= ৪৫ লাখ। সব মিলিয়ে মোট ব্যয় সর্বোচ্চ ৫০ লাখ। অথচ ১৫ হাজার স্টুডেন্টের কাছ থেকে মাসে এভারেজে ১৩০০ টাকা বেতন নিলে স্কুলে আয় ১৫,০০০×১৩০০=১ কোটি ৯৫ লাখ। আমরা টিচার স্টাফ সবাই মিলে পাই ৫০ লাখ। বাকী প্রায় দেড় কোটি কোথায় যায় তা জানতে চেয়েছো?
বছরে ৩ সেমিস্টার পরীক্ষায় আয় ৩×২ কোটি=৬ কোটি। আমাদের খাতা দেখার সম্মানী + কাগজ খরচ ৫০ লাখ। বাকী ৫ কোটি ৫০ লাখ কোথায় যায় তা জানতে চেয়েছো?
বাধ্যতামূলক কোচিং ছিল বাংলা ভার্সনে ৫ম থেকে ১০ম শ্রেণিতে, ইংলিশ ভার্সনে ৩য় থেকে ১০ম শ্রেণিতে, কলেজে ফার্স্ট ও সেকেন্ড ইয়ারে। ১১ হাজার স্টুডেন্টের কাছ কোচিং বাবদ আয় ৩ কোটি। ৩ কোটির ১/৩ অংশ ১ কোটি ঢুকতো কোন একজনের পকেটে তা জানতে চেয়েছো?
বাধ্যতামূলক ক্লাব থেকে বছরে আয় ১৫,০০০×৫০০০= ৭.৫ কোটি যার প্রায় ৪ কোটি কোন একজনের পকেটে ঢুকতো তা জানতে চেয়েছো?
পুন:ভর্তি ও নতুন ভর্তিতে প্রতি জানুয়ারিতে আয় ১৫,০০০×১০,০০০ = ১৫ কোটি যার প্রায় পুরোটাই কার পকেটে ঢুকতো তা জানতে চেয়েছো? এছাড়াও সারা বছর ধরে রেজিস্ট্রেশন পিকনিক অনুষ্ঠান বই বিক্রি এটা-সেটার নামে তোলা ২ কোটি টাকা কোথায় যায় তা জানতে চেয়েছো? অনেক তো করলে। এবার পারলে এগুলোর উত্তর এনে দিও।
রাজধানীর পূর্ব দিকে অবস্থিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সাম্প্রতিক সময়ে নজরকাড়া সাফল্য অর্জন করেছে ফলাফলে। প্রতিষ্ঠানটির পাঠদান পদ্ধতি ও নিয়ম-শৃঙ্খলাও অভিভাবকদের আকৃষ্ট করছে।
শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা। তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করতে ওয়েবসাইটে দেওয়া মোবাইল নম্বরে কলা করা হয়। তবে ইসমাইল হোসেন নামের একজন শিক্ষক কলটি রিসিভ করে জানান, শিক্ষকের ফেসবুক পোস্টটি কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। তবে তাতে অনেক অসংগতি রয়েছে।সশরীরে প্রতিবেদককে স্কুলে গিয়ে কথা বলার পরামর্শ দেন ওই শিক্ষক।