অপহরণ
ছয় বছরের শিশুর মা পরিচয় দিয়ে ধরা ১৪ বছরের কিশোরী
ছয় বছর বয়সী একটি শিশুকে লেগুনায় করে তাকে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছিল ১৪ বছরের এক কিশোরী। শিশুটি অনবরত কান্না করছিল। যাত্রীদের সন্দেহ হলে তারা লেগুনাটি থানায় নিয়ে যায়। পরে বেরিয়ে আসে নেশার টাকা জোগাড় করতে শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছিল।
ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায়, বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১২ জুলাই) তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলা সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেলে শিশুটিকে জেলার হাটহাজারী থানার এগারোমাইল এলাকায় বাড়ির সামনে থেকে অপহরণ করা হয়। ওই সময় শিশুটি বাড়ির সামনে খেলছিল। সেখান থেকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে তাকে অপহরণ করে ১৪ বছরের ওই কিশোরী। পরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর শিশুটিকে না পেয়ে তার বাবা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
পুলিশ জানায়, অপহরণের পর শিশুটিকে বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় ১৬ বছর বয়সী আরেক কিশোরীর বাসায় রাখা হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে লেগুনায় করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সময় বিষয়টি ধরা পড়ে।
ওই সময় লেগুনার যাত্রীদের একজন ছিলেন রিয়াজ কবির। তিনি জানান, চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের সামনে থেকে বন্ধুর বাসায় যেতে তিনি লেগুনাতে ওঠেন। লেগুনাটি বায়েজিদ বোস্তামী এলাকার মাজার গেটে গেলে শিশুটিকে নিয়ে লেগুনায় ওঠে ওই কিশোরী। কিছু দূর যেতেই শিশুটি কান্না শুরু করে। কিশোরী তখন শিশুটির মা পরিচয় দিয়ে বলে, পুতুলের জন্য কান্না করছে। তবে শিশুটির সঙ্গে কিশোরীর বয়স মেলাতে গিয়ে সন্দেহ হয়।
এরপর লেগুনায় থাকা আরেক যাত্রী, যিনি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা, তিনি ওই শিশুটির কান্নার কারণ জানতে চান। এতে রীতিমতো ক্ষিপ্ত হয়ে যায় সেই কিশোরী। একপর্যায়ে যাত্রী রিয়াজ কবির তার বন্ধু মো. নোমানকে কল দিয়ে তাকে বায়েজিদ বোস্তামী থানার সামনে থাকতে বলেন। এতে ওই কিশোরী শঙ্কিত হলে রিয়াজ কবিরের সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। পরবর্তীতে লেগুনার চালককে গাড়িটি বায়েজিদ বোস্তামী থানায় নিয়ে যেতে বলা হয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে কয়েকজন যাত্রী বায়েজিদ থানায় ঢোকার আগে লেগুনা থেকে নেমে গেলেও ওই শিক্ষিকা সেই কিশোরীকে ধরে রাখেন। একপর্যায়ে সেই কিশোরী পুলিশের কাছে অপহরণের বিষয়টি স্বীকার করে।