Logo
Logo
×

সারাদেশ

এলেঙ্গা রিসোর্টে পুলিশি অভিযানের খোঁজে গিয়ে যা জানা গেল

Icon

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৪:০৬ পিএম

এলেঙ্গা রিসোর্টে পুলিশি অভিযানের খোঁজে গিয়ে যা জানা গেল

টাঙ্গাইলের এলেঙ্গার বঙ্গবন্ধু সেতু ব্রিজ রিসোর্ট অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট।

টাঙ্গাইলের উপশহর এলেঙ্গার বঙ্গবন্ধু সেতু ব্রিজ (বিরতি) রিসোর্ট অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে গত রবিবার (৩০ জুন) গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে তিন পুরুষ ও সাত নারীকে আটক করে পুলিশ। এই অভিযান নিয়ে একেক জন একেক রকমের মন্তব্য করছেন। আশেপাশের মানুষজনের মাঝে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। 

এ অভিযানের পেছনের কারণ খুঁজতে অনুসন্ধানে গিয়ে কথা হয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে। উঠে এসেছে কিছু অজানা তথ্য।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিরতি রিসোর্টে পুলিশ সদস্যরা সারাদিন বসে আড্ডা দেন এবং চা পান করেন। আগেও তো তাদের চোখের সামনেই সব হতো। বিষয়গুলোতো সমাজের সবাই জানতো। হঠাৎ করে পুলিশ সেখানে কী কারণে সেখানে অভিযান চালালো বিষয়টি তারা বুছতে পারছেন না।

রিসোর্টের জেমস নামের এক কর্মচারী বলেন, এই অভিযানে আমাদের কিছুই হয়নি। আগের মতোই রিসোর্ট চলছে। তিনি আরও বলেন, রিসোর্টের অফিসিয়াল নম্বরে যদি কোনো গেস্ট কল করে আসে, যে ফোন রিসিভ করে তার মাধ্যমেই কি লোক আসে! সেক্ষেত্রে ফাহাদ ভাইয়ের মাধ্যমে আটককৃত গেস্ট এসেছিল। তারা একটি কটেজ ভাড়া নেয়। একটি হাইয়েস গাড়িতে গেস্টরা রিসোর্টে প্রবেশ করেন। গাড়ির ভিতরে মহিলা না পুরুষ ছিল জানি না। কয়জন ছিল তাও জানি না। তাদের সমস্যার কারণে হয়তোবা কেউ কল করে পুলিশ আনছে। 

এছাড়া জানা যায়, একটি বেসরকারি টেলিভিশনের রিপোর্টার ও তার ক্যামেরাম্যান সন্ধ্যার পর ওই রিসোর্টে অবস্থান করছিলেন। সেখানে নারী ও পুরুষের আনাগোনা দেখে পুলিশ সুপারকে বিষয়টি অবগত করেন বলে জানা যায়। 

এদিকে রিসোর্টের কেয়ারটেকারদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা তো বাহিরে ডিউটি করি। ভেতরের অনেক কিছুই আমরা জানতে পারি না বা জানিও না। আর গেট দিয়ে অনেকেই যায় আসে, কিন্তু সবাইকেতো আমরা চিনি না। শিওর করে বলতে পারবো না। হালকা একটু শুনলাম প্রশাসনের কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হয়তো দুপুরে সেখানে খেতে গিয়েছিল। তাদের পরিচয় পাওয়ার পরও হয়তোবা তাদের কোনো ডিসকাউন্ট দেয়নি। এটা নিয়ে কথা-কাটাকাটির কথা শুনেছি। 

রিসোর্টের পাশে এক মুদি দোকানি বলেন, আমরা যতটুকু জানি, প্রতি ঈদেই পুলিশ হাইওয়েতে ডিউটি করে। গত রোজার ঈদের সময় পুলিশের পক্ষ থেকে খাবার চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ না কি অস্বীকৃতি জানিয়েছিল।

এলেংগার রহমান নামে একজনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, রিসোর্ট শুরুর থেকেই তারা এই ব্যবসা করে আসছে। এটা আজকে নতুন না। তবে এতোদিন কেন অভিযান হলো না সে বিষয়টি বলতে পারব না। তিনি আরও বলেন, এর আগে জুয়ারিদের আটক করছিল। পরের দিনই কোর্ট থেকে জামিনে এসেছে। এখন শুনলাম এরা নাকি জামিন পায়নি। তবে এলাকার ভেতরে এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না। কারণ তারা প্রভাবশালী। 

স্থানীয় এক সংবাদকর্মী বলেন, আমি জানতে পেরেছি সেদিন রাতে রিসোর্টে এক প্রকল্প কর্মকর্তা এসেছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকেই ধরার জন্য এমন অভিযান ছিল।

এসময় তিনি আরও জানান, ওই রিসোর্টে অনেক নেতারাও আড্ডা দেয়। যেটা বর্তমান সাংসদ পছন্দ করেন না। তাছাড়া সেখানে অসামাজিক কার্যকলাপ হয় সেটাও এই আসনের সংসদ সদস্য পছন্দ করেন না বলে জানতে পেরেছি। 

সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, রিসোর্টের ভাইস ম্যানেজার ফাহাদ শেখও মাঝে মাঝে এই ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হন। তার একটি ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সে ছবিতে দেখা যায় ফাহাদ একটি মেয়ে নিয়ে কক্ষে বসে আছেন। 

তবে এসব বিষয়ে জানার জন্য রিসোর্টের ব্যবস্থাপক ফখরুলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে অন্য একজন ফোন ধরেন। তিনি জানান, ব্যবস্থাপক ঢাকা আছেন। এছাড়াও সাংবাদিক পরিচয়ে রিসোর্টে প্রবেশ করতে চাইলে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। 

তবে সরেজমিনে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে একটি সন্দেহের কথা জানা যায়, প্রভাবশালী একটি মহল রিসোর্টের মালিকানা চেঞ্জ করার জন্য হয়তো পাঁয়তারা করছে। তাই বর্তমান ম্যানেজমেন্টকে বেকায়দায় ফেলার জন্যও এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, গত ৩০ জুন রবিবার টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা বঙ্গবন্ধু সেতু ব্রিজ রিসোর্ট থেকে তিনজন পুরুষ ও সাতজন নারীকে গ্রেপ্তার হয়। পরের দিন ১ জুলাই আদালতের মাধ্যমে মানব পাচার মামলায় তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন