গভর্নিং বডির সভাপতি না বানালে অধ্যক্ষকে হত্যার হুমকি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১২:০১ এএম
২৪ জুন আলাউদ্দিন মিয়া কলেজের অধ্যক্ষকে হত্যার হুমকি দেন।
'রংপুরের মানুষ আমাকে ভিপি আলাউদ্দিন নামে চেনে। দলের চেয়ারম্যানের ডিও লেটার নিয়ে এসেছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাকে কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি করতে হবে। কীভাবে করতে হবে, তা আমি জানি না, জানতেও চাই না। কিন্তু আমাকেই সভাপতি করতে হবে। এই তার ডিও লেটার।'
এভাবেই গত ২৪ জুন সমাজকল্যাণ বিদ্যাবিথী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মফিজার রহমান মিজুকে হত্যার হুমিক দেন রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির (জাপা) আহ্বায়ক মো. আলাউদ্দিন মিয়া।
গতকাল রবিবার রাতে অধ্যক্ষ মফিজার রহমান মিজুকে হত্যার হুমিক দেওয়া সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে শুরু হয় আলোচনা–সমালোচনা।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কথা বলার এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে দাঁড়িয়ে যান আলাউদ্দিন। সঙ্গে সঙ্গে নিজের প্যান্টের পকেট থেকে পিস্তল বের করে বলেন, ‘চুপ, ডোন্ট টক, একদম গুলি করে দেবো। কোনো কথা বলবি না। যা বলেছি, তাই কর। গুলি করে মারলে আমার লোমও বাঁকা করা যাবে না।’ এ সময় তাকে পিস্তল বের করতে দেখে পাশে বসে থাকা জাতীয় ছাত্র সমাজের এক নেতা আলাউদ্দিনের হাত ধরে চেয়ারে বসিয়ে দেন। আরেক নেতা শান্ত করার চেষ্টা করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মফিজার রহমান মিজু বলেন, সেদিনের ঘটনা নিয়ে আমি এখনও আতঙ্কিত এবং বিস্মিত। বিষয়টি পুলিশ, জেলা প্রশাসন এবং জাতীয় পার্টির দায়িত্বশীল নেতাদের জানিয়েছি। কিন্তু এখনও তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
জানতে চাইলে মো. আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘একটা মিসটেক হয়ে গেছে। আসলে ভুল–বোঝাবুঝি থেকে এটি হয়েছিল।’
এ বিষয়ে রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। আমি এ বিষয়ে এখন কোনো কথা বলতে চাই না।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুনতাসির বিল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। তবে অধ্যক্ষকে গুলি করে হত্যার হুমকির খবর তিনি শুনেছেন।
উল্লেখ্য, আলাউদ্দিন মিয়ার বাড়ি নগরীর বাবু খাঁ এলাকায়। তিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের উপদেষ্টা ছিলেন। সম্প্রতি তাকে রংপুর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর আগে জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি কারমাইকেল কলেজ ছাত্র সংসদের দুবারের ভিপি ছিলেন। পড়াশোনা শেষে কাস্টমস কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। এরপর অবসরে যান। সম্প্রতি জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক।