রেলপথে দূরত্বভিত্তিক রেয়াত পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন করেছে রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) এই কমিটির উদ্যোগে কুমিল্লা রেলস্টেশনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ৪ মে থেকে দূরত্ব ভিত্তিক রেয়াত বাতিল কার্যকর করা হয়েছে। রেয়াতি ব্যবস্থার কারণে দূরপাল্লার ট্রেনে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে ছাড় পেয়ে থাকতেন যাত্রীরা। এ ব্যবস্থায় ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ছাড়ের সুবিধা নেই। তবে ১০১ থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরত্বের ভ্রমণে ভাড়ার ওপর রেয়াতের হার ২০-৩০ শতাংশ ছিল।
বক্তারা আরও বলেন, এরশাদের পতনের পর ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ রেলওয়েতে দূরত্বভিত্তিক ও সেকশনভিত্তিক রেয়াতি দেওয়া হয়। গত ১৬ মার্চ বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার শাহাদাৎ আলী রেলের ভাড়া বাড়ছে বলে জানিয়েছিলেন। সেসময় ভাড়া বৃদ্ধির গুঞ্জন ওঠার পর রেলপথমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, রেলের ভাড়া বৃদ্ধির কোনো পরিকল্পনা নেই।
বক্তারা বলেন, এছাড়া রেলমন্ত্রী বলেন, যখন রেয়াতি দেওয়া হয়েছিল, তখন তো রেলে প্যাসেঞ্জার চড়তো না। তখন রেয়াত দিয়ে যাত্রীদের আকর্ষণ করা হত। এখন তো ট্রেনে প্যাসেঞ্জার ওঠে, পর্যাপ্ত যাত্রী ওঠে ট্রেনে। রেলপথ ঢাকা থেকে দাউদকান্দি উপজেলা হয়ে লাকসাম প্রবেশ করলে এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের বর্তমান দূরত্ব ৩২১ কিমি থেকে ৯০ কিলোমিটার হ্রাস পাবে। অর্থাৎ এই রুটের দৈর্ঘ্য হবে ২৩১ কিলোমিটার। মানে এই অঞ্চলের যাত্রীদেরও বাড়তি ৯০ কিলোমিটারের ভাড়া দিতে হবে। ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ রেলওয়েতে দূরত্বভিত্তিক ও সেকশনভিত্তিক রেয়াতি দেওয়া হয়। যাত্রীদের রেলপথ ব্যবহারে উৎসাহিত করার জন্য এটি করা হয়। তার মানে এখন রেলপথে যাত্রীদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। কেন?
বক্তারা আরও বলেন, কুমিল্লার যাত্রীরা ভৈরব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, জয়দেবপুর ঘুরে ঢাকা শহরে যেতে হয়। সেই কারণে বাড়তি সময় গেলেও সাথে বাড়তি ভাড়াও দিতে হত না। এখন রেলওয়ে সৃষ্ট ঘোরাপথের ৯০ কিলোমিটারের ভাড়ার দায় মেটাতে হবে ফেনীর যাত্রীদের। অথচ রাষ্ট্রের চোখে ভাড়া বৃদ্ধির কথা অস্বীকার করা হচ্ছে।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আহমেদ ইসাহাক। প্রধান বক্তা ছিলেন কলামিস্ট ও সংগঠক নাহিদ হাসান। গণকমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য মামুনুর রশীদ, অ্যাক্টিভিসস্ট হাসান মজুমদার, মিজানুর রহমান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জুন চট্টগ্রাম স্টেশনে শুরু হয়ে ২৬ জুন ফেনী, নোয়াখালির মাইজদী স্টেশনের পর বৃহস্পতিবার কুমিল্লায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে একই দাবিতে উত্তরবঙ্গের কুড়িগ্রাম, রংপুর, পার্বতীপুর, গাইবান্ধা,বগুড়া ও লালমনিরহাটে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।