Logo
Logo
×

সারাদেশ

রাসেলস ভাইপার এবার নির্দেশনা দিল পরিবেশ মন্ত্রণালয়

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৪, ০৪:৪৬ পিএম

রাসেলস ভাইপার এবার নির্দেশনা দিল পরিবেশ মন্ত্রণালয়

রাসেলস ভাইপার নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। আজ  শনিবার (২২ জুন) মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, রাসেলস ভাইপারের (চন্দ্রবোড়া, বোড়া বা উলুবোড়া) উপস্থিতি উদ্বেগজনক হলেও এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে মানুষের সঙ্গে এই সাপের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা কম। এই সাপ সাধারণত নিচু ভূমির ঘাসবন, ঝোঁপজঙ্গল, উন্মুক্ত বন, কৃষি এলাকায় বাস করে। তারা মানুষের বসতি এড়িয়ে চলে। সাপটি মেটে রঙের হওয়ায় মাটির সঙ্গে সহজে মিশে যেতে পারে। মানুষ খেয়াল না করে খুব কাছে গেলে সাপটি বিপদ দেখে ভয়ে আক্রমণ করে। রাসেলস ভাইপার দক্ষ সাঁতারু হওয়ায় নদীর স্রোতে ও বন্যার পানিতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিস্তৃত হয়েছে। এ জন্য সবাইকে সাবধানতা অবলম্বনের অনুরোধ জানানো হয়।

সাপের কামড় এড়াতে করণীয় সম্পর্কে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যেসব এলাকায় রাসেলস ভাইপার দেখা গেছে, সেসব এলাকায় চলাচলে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। লম্বা ঘাস, ঝোঁপঝাড়, কৃষি এলাকায় হাঁটার সময় সতর্ক থাকতে হবে। গর্তে হাত-পা ঢুকানো যাবে না। সংশ্লিষ্ট এলাকায় কাজ করার সময় বুট এবং লম্বা প্যান্ট পরতে হবে। রাতে চলাচলের সময় টর্চ লাইট ব্যবহার করতে হবে। বাড়ির চারপাশ পরিস্কার ও আবর্জনামুক্ত রাখতে হবে। জ্বালানি লাকড়ি, খড় সরানোর সময় বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সাপ দেখলে তা ধরা বা মারার চেষ্টা করা যাবে না। প্রয়োজনে জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩ নম্বরে কল করতে হবে বা নিকটস্থ বন বিভাগের অফিসকে জানাতে হবে।

এছাড়া সাপ কামড়ালে করণীয় সম্পর্কে বলা হয়, দংশিত অঙ্গ নড়াচড়া করা যাবে না; পায়ে দংশনে বসে পড়তে হবে, হাঁটা যাবে না; হাতে দংশনে হাত নড়াচাড়া করা যাবে না– হাত-পায়ের গিড়া নাড়াচাড়ায় মাংসপেশীর সংকোচনের ফলে বিষ দ্রুত রক্তের মাধ্যমে শরীরে ছড়িয়ে গিয়ে বিষক্রিয়া ঘটতে পারে; আক্রান্ত স্থান সাবান দিয়ে আলতোভাবে ধুতে অথবা ভেজা কাপড় দিয়ে আলতোভাবে মুছতে হবে; ঘড়ি, অলঙ্কার বা তাবিজ থাকলে খুলে ফেলতে হবে; দংশিত স্থানে কাঁটা, সুই ফোটানো কিংবা কোনোরকম প্রলেপ লাগানো যাবে না; সাপে কাটলে ওঝার কাছে গিয়ে অযথা সময় নষ্ট করা যাবে না; যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে যেতে হবে; আতঙ্কিত না হয়ে নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে গিয়ে অ্যান্টিভেনম নিতে হবে।

রাসেলস ভাইপারের প্রাদুর্ভাব কমাতে করণীয় সম্পর্কে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বেজি, গুইসাপ, বাগডাশ, গন্ধগোকুল, বন বিড়াল, মেছো বিড়াল, তিলা নাগ, ঈগল, সারস, মদন টাক এবং কিছু প্রজাতির সাপ রাসেল ভাইপার খেয়ে তাদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এসব বন্যপ্রাণীকে মানুষের নির্বিচারে হত্যার কারণে প্রকৃতিতে এ সাপের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে বন্যপ্রাণী দেখলেই অকারণে তা হত্যা, তাদের আবাসস্থল ধ্বংস করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

এছাড়া স্মরণ রাখা প্রয়োজন, রাসেলস ভাইপার বন্যপ্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ এর ৬(১) ধারা অনুযায়ী সংরক্ষিত প্রাণী। রাসেলস ভাইপার ইঁদুর খেয়ে যেমন ফসল রক্ষা করে, তেমনি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সাপের বিষ হতে অনেক জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরি হয়। সাপ মারা দণ্ডনীয় অপরাধ, সাপ মারা হতে বিরত থাকুন।

বিবৃতিতে বলা হয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর নির্দেশনায় বাংলাদেশ বন বিভাগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নে স্থানীয় বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ও সচেতন সমাজের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি সক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ‘দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টিভেনম আছে। সব জায়গায় হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন