সিলেটে ঈদের দিন ভোর থেকে সাড়ে ৪ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে তলিয়ে গেছে মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার ঈদগাহ ও সড়ক। বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে ঈদগাহে হয়নি ঈদের জামাত। স্থানীয় মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হলেও দেরিতে শুরু হয়। এতে অনেকটাই মলিন হয়েছে ঈদের আনন্দ। পশু কোরবানি করা নিয়েও দেখা দেয় অনিশ্চয়তা।
এদিকে পাহাড়ি ঢলে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৬ লাখ মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারা ও সারি—এই তিনটি নদীর তিনটি পয়েন্ট দিয়ে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্ট দিয়ে ১০ দশমিক ৩৪ মিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। যেখানে বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮০ মিটার।
সোমবার দেশের বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। এদিন সিলেটে ভোর ৪টা থেকে শুরু হয় বর্ষণ। টানা চলে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর প্রধান প্রধান সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি ঢুকেছে অনেকের বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। শুকনা স্থান না পেয়ে অনেকেই কোরবানির গরু-ছাগল পানির মধ্যে বেঁধে রেখেছেন। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অবনতি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতির।
বন্যা আক্রান্তদের জন্য ইতোমধ্যে ৪৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আজ সকাল পর্যন্ত কোম্পানীগঞ্জ, গোয়ানঘাট, কানাইঘাটসহ কয়েকটি উপজেলায় ১০ হাজারের মতো মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে ভারী বৃষ্টি মাথায় নিয়েই সকাল ৮টায় শাহী ঈদগাহে সিলেটে প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি বছর এই জামাতে লক্ষাধিক মুসল্লি অংশ নিলেও এবার ছিল ব্যতিক্রম। শুধু শাহী ঈদগাহ নয়, প্রতিটি মসজিদ ও ঈদগাহের অবস্থা ছিল একই। সকাল ৮টায় পুলিশ লাইন জামে মসজিদে পানি প্রবেশ করায় একাংশে নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে মুসল্লিদের।
একইভাবে মেজরটিলা, কদমতলী, বিমানবন্দর সড়ক, উপশহর, সুবহানিঘাটসহ বেশ কয়েকটি এলাকার ঈদগাহ ও মসজিদে পানি প্রবেশ করায় নামাজ আদায়ে ব্যাঘাত ঘটে।