মিয়ানমারের বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠছে শাহপরীর দ্বীপ, আতঙ্কে বাসিন্দারা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৪, ০৮:৫৩ পিএম
কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত এলাকা প্রায় এক মাস পর আবারও কেঁপে উঠেছে। গতকাল বুধবার রাত আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত উপজেলার নাফ নদীর এপারের শাহপরীর দ্বীপ ও আশপাশের এলাকা ভারী অস্ত্র ও গোলার বিস্ফোরণের একের পর এক শব্দ ভেসে আসে। এ কারণে সীমান্তের কয়েক গ্রামের মানুষ আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, শাহপরীর দ্বীপ ও আশেপাশের এলাকায় নদীর ওপারে রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলছে। বুধবার বিকেলে শাহপরীর দ্বীপের অপরদিকে মিয়ানমারের একটি যুদ্ধজাহাজ আসে। তারপর ভোররাত থেকেই বিস্ফোরণের শব্দ শুরু হয়।
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম বলেন, কয়েক দিন ধরে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনার মাঝামাঝি এলাকায় সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যাতায়াতকারী নৌযান লক্ষ্য করে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। তাতে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও আতঙ্কে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কে বা কারা গুলি ছুড়ছে, তাও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম আরও বলেন, শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের আশপাশের মেগিচং, কাদিরবিল, নুরুল্লাহপাড়া, মাঙ্গালা, নলবইন্ন্যা, ফাদংচা ও হাসুরাতা এলাকা। ধারণা করা হচ্ছে, মংডু শহর ও আশপাশের এলাকাগুলোতে দেশটির সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে লড়াই তীব্র হয়ে উঠেছে। তাতে উভয় পক্ষ ভারী অস্ত্র ও গোলাবারুদ ব্যবহার করায় বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যায়।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘গতকাল বুধবার রাত থেকে টেকনাফে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ আসছে। আমরা এ বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও সজাগ রয়েছে।’
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে ফেব্রুয়ারির শুরু থেকেই জান্তা সেনা ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীর আক্রমণের তীব্রতার কারণে জান্তা সৈন্যদের পিছু হটতে হয়েছিল এবং অনেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। আরাকান আর্মি বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন রাখাইন রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করেছে এবং রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় লড়াই অব্যাহত রয়েছে।