Logo
Logo
×

সারাদেশ

শিপইয়ার্ড থেকে ৭ কোটি টাকার জাহাজ উধাও

Icon

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৪, ০৩:১৭ এএম

শিপইয়ার্ড থেকে ৭ কোটি টাকার জাহাজ উধাও

ছবি: সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় শিপইয়ার্ডে মেরামত করতে আনা ‘সাত কোটি টাকা’ মূল্যের একটি তেল পরিবহনকারী জাহাজ উধাও হয়ে গেছে। উপজেলার নয়ানগর গ্রামের মেঘনার তীরের থ্রি-অ্যাঙ্গেল মেরিন লিমিটেডের শিপইয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা জাহাজ মালিক এবং শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ একে- অপরের বিরুদ্ধে গজারিয়া থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দাখিল করেছে।

জানা যায়, গত ৩০ মে জাহাজ মালিক পক্ষের হয়ে বেঙ্গল ইলেকট্রিক লিমিটেডের কর্মকর্তা মহিউদ্দিন বাদী হয়ে থ্রি-অ্যাঙ্গেল শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপকসহ ৭ জনের নামে অভিযোগ করেন। মেরামত করতে দেওয়া সাড়ে সাত ৭ কোটি দামের একটি জাহাজ শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সরিয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। 

এর আগে ২৯ মে রাতে থ্রি-অ্যাঙ্গেল শিপইয়ার্ডের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক (অপারেশন) মো. মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে একটি অভিযোগ করেন। তিনি জাহাজটি শিপইয়ার্ডে মেরামত করতে আনা ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে আসামি করেন। 

মহিউদ্দিনের লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৩ মে বেঙ্গল ইলেকট্রিক লিমিটেডের মালিকাধীন টেকনাফ নামের ওই অয়েল ট্যাংকার জাহাজটি মেরামতের জন্য থ্রি অ্যাঙ্গেল শিপ ইয়ার্ডে নিয়ে যান প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মো. আবুল রশিদ ও মো. মিজানুর রহমান। শিপইয়ার্ডের লোকজন সেটি শিপইয়ার্ডে উঠায়। জাহাজটি মেরামত শেষে ওই বছরের ১৯ অক্টোবর এবং ২০২৪ সালের ৩ জানুয়ারি শিপইয়ার্ডের স্টাফ রবিউল হক ওরফে রফিকের মাধ্যমে মেরামতের বিল পাঠান। ওই বিলে থ্রি অ্যাঙ্গেল মেরিন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. আমিনুল ইসলাম, পরিচালক এমএ রহমান আনসার, পরিচালক শেখ মাহমুদ হাসান, জিএম অপারেশন  মোজাম্মেল হক, ব্যবস্থাপক বেলাল হোসেন, হিসাবরক্ষক হুমায়ুন কবির, ফোরম্যান আলামিনের স্বাক্ষর ছিল। মেরামতের বিল পেয়ে তা পরিশোধ করে জাহাজটি নিয়ে যাওয়ার জন্য ২৯ মে থ্রি অ্যাঙ্গেল শিপ ইয়ার্ডে যায় বেঙ্গল ইলেকট্রিকের ব্যবস্থাপক সঞ্জয় কুমার সাহা এবং ব্যবস্থাপক প্রশাসন খালেকুজ্জামান রায়হান। তারা শিপ ইয়ার্ডে গিয়ে জাহাজ দেখতে না পেয়ে শিপ ইয়ার্ড শ্রমিকদের জাহাজের কথা জিজ্ঞেস করলে জানতে পারেন শিপ ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ জাহাজ অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছে।

এদিকে একই ঘটনায় শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষের অভিযোগে বলা হয়, বিল পরিশোধ না করে  ২১ মে রাত ১টার পরে শিপইয়ার্ডের লোকজনের অগোচরে জাহাজটি নিয়ে গেছে জাহাজ কর্তৃপক্ষ। তাদের শিপইয়ার্ডের দক্ষিণ প্রান্তে ওই কার্গো জাহাজ কর্তৃপক্ষ নিজেদের পাহারাদার দিয়ে রেখেছিল। দীর্ঘদিন শিপইয়ার্ডে থাকায় ওই জাহাজের ৩০ লাখ টাকার বার্থিং বিল হয়। সে বিল পরিশোধ করতে বলা হয়। জাহাজ কর্তৃপক্ষ লোকজন বিল পরিশোধ না করেই জাহাজটি নিয়ে যেতে চায়। এর জেরে চলতি বছরের ১৮ মে রাতে জাহাজটি নিয়ে যায় জাহাজ কর্তৃপক্ষ।

বেঙ্গল ইলেকট্রিক লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোত্তাকিন সালাম বলেন, আমাদের জাহাজটির মূল্য প্রায় ৭ কোটি টাকা। জাহাজটির দৈর্ঘ্য ১৭৯ ফুট ও ৩০ ফুট চওড়া। এতো বড় জাহাজটি শিপইয়ার্ডের লোকজন গায়েব করে ফেলেছে। আমরা আমাদের জাহাজ ফেরত চাই। 

তিনি আরও জানান, তারা অভিযোগে উল্লেখ করেছে ২১ মে রাতে জাহাজটি উধাও হয়। অভিযোগ করে ২৯ মে রাতে। মাঝখানের সাতদিন আমাদের জানায়নি কেন।

জাহাজ মালিকদের অভিযোগের থ্রি অ্যাঙ্গেল মেরিন লিমিটেডের পরিচালক এমএ রহমান আনসার বলেন, আমরা প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যম্যে দোষীদের শাস্তি দাবি করছি। আমাদের হেয় করার জন্য, সুনাম নষ্ট করার জন্য এমনটা করা হচ্ছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবো। 

এ ব্যাপারে গজারিয়া থানার ওসি মো. রাজীব খান সংবাদমাধ্যমকে বলেন,  দুটি পক্ষ থেকে আলাদা অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনাটি তদন্ত করছি।


Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন