Logo
Logo
×

সারাদেশ

তিন মাস যাওয়া যাবে না সুন্দরবনে

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৪, ১২:২৩ এএম

তিন মাস যাওয়া যাবে না সুন্দরবনে

শনিবার (১ জুন) থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত টানা তিন মাস যাওয়া যাবে না সুন্দরবনে। এ সময় পর্যটক প্রবেশ, সাধারণ মানুষের চলাচলসহ সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। সুন্দরবনের নদী–খালে মাছ ও বনে প্রাণীদের বিচরণ ও প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (৩১ মে) পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এই তিন মাস মাছের প্রজনন মৌসুম। তাই এই তিন মাস মাছ ধরা বন্ধের পাশাপাশি পর্যটক প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ফলে দীর্ঘ তিন মাস বন্ধ থাকবে সুন্দরবন প্রবেশের সকল পারমিট। ১ সেপ্টেম্বর থেকে আগের মতো আবার সুন্দরবনে জেলে ও পর্যটকদের জন্য পারমিট দেওয়া শুরু হবে। 

সাধারণ জেলেরা জানান, সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকাসহ ২৫ ফুটের কম প্রশস্ত খালে সারা বছর মাছ ধরা নিষেধ থাকে। এসব নদী-খালে উপকূলীয় এলাকার হাজার পারমিটধারী জেলে মৎস্য আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সুন্দরবনের জেলেদের মাছ ধরা ছাড়া আর কোনো কাজ করার সুযোগ নেই। বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে সুন্দরবনসংলগ্ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার ওপর মৎস্য আহরণ তিন মাস বন্ধ থাকলে জেলেদের জীবিকা নির্বাহ করা আরো কঠিন হয়ে পড়বে। 

তারা আরো জানান, তারা ৩০ থেকে ৪০ বছর ধরে বংশপরম্পরায় সুন্দরবনে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। এখন মাছ ধরা বন্ধ করে দিলে তাদের না খেয়ে থাকতে হবে। এই তিন মাসের জন্য সরকার তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিলে তারা আর সুন্দরবনে যাবে না বলে জানান।

সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) শেখ মাহাবুব হাসান বলেন, ‘জুন, জুলাই ও আগস্ট মাস হচ্ছে মৎস্য প্রজননের উপযুক্ত মৌসুম। এই সময় সব প্রকারের মাছ ডিম পাড়ে। তাই  প্রতিবছরের মতো এ বছরও ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাস সব প্রকার মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকবে। এজন্য নির্ধারিত স্টেশনগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ 

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সমন্বিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতিবছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দুই মাস সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ থাকত। ২০২২ সালে মৎস্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে এ নিষেধাজ্ঞা এক মাস বৃদ্ধি করে ১ জুন থেকে করা হয়েছে। সেই থেকে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস বনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ রাখা হচ্ছে। 

এদকিে বিষ দিয়ে মাছ আহরণ বন্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে। বনজীবীরা বলছেন, গত বছরগুলোতে তিন মাসের এই নিষেধাজ্ঞার সময় প্রভাবশালী মাছ ব্যবসায়ী মহাজন চক্রের দখলে ছিল সুন্দরবনের অভয়াশ্রম। সাধারণ জেলে ও বাওয়ালিদের অনুপস্থিতির সুযোগ কাজে লাগিয়ে অসাধু বনরক্ষীদের ‘ম্যানেজ করে’ তারা হরিণ শিকার ও নদী-খালে বিষ দিয়ে মাছ আহরণ করেছে। বনের খালে বিষ দিয়ে মাছ ধরে বনের অভ্যন্তরে মাচা করে শুকিয়ে বিক্রি করেছে। এ বছর সতর্ক অবস্থানে থাকবে বনজীবীরা। অসাধুদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন