বরিশালে ৩ জুতা কারখানায় আনসার-শ্রমিক সংঘর্ষ, গুলি: আশঙ্কাজনক ২
বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৪, ০২:৫০ এএম
ফরচুন, প্রিমিয়ার ও এম জে সু কারখানায় আনসারদের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়। ছবি: সংগৃহীত
বরিশাল বিসিক শিল্প নগরীতে শ্রমিক অসন্তোষের জেরে রপ্তানিমুখি তিন জুতার কারখানায় বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। গুলিতে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে মেহেদী হাসান ও মো. রাজিব নামের দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের অনলাইনের বাংলা সংস্করণে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, খারাপ ব্যবহার, ঠিকমতো বেতন না পাওয়া ও ওভারটাইম না দেওয়ার ঘটনায় শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হলে তাদের লাঞ্ছিত করে আনসাররা।
এ ঘটনায় শ্রমিকরা লাঠি ও ঢিল ছুড়ে ফরচুন, প্রিমিয়ার ও এম জে সু নামে তিনটি কারখানার বাইরের কাচ ভেঙে ফেলে। তারা কারখানার ভেতরের যন্ত্রপাতিও নষ্ট করে বলে জানিয়েছে এই তিন জুতার ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষ।
বাপ্পি হাসান নামে এক শ্রমিক বলেন, ঠিকমতো বেতন না পাওয়া, খারাপ ব্যবহার ও ওভারটাইম না দেওয়ার ঘটনায় শ্রমিকরা আগে থেকেই বিক্ষুব্ধ ছিল। গত মাসের বেতন কেউ কেউ এখনো না পাওয়ায় তারা বিক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা একজোট হতে চাইলে আনসাররা তাদের বাধা দেয়। এসময় আনসারদের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়।
এসময় দশ রাউন্ড গুলির কথা স্বীকার করে আনসারের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা আত্মরক্ষার্থে শুধু রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে।
কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আনসারদের গুলিতে আহত অন্তত চারজন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, আহত পাঁচজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে মেহেদী হাসান ও মো. রাজিবের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বরিশাল জেলা আনসার কমান্ডার এস এম মজিবুল হক পাভেল বলেন, বিসিকে অবস্থিত আনসার ক্যাম্পটি বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ভাঙচুর চালিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। তারা সব আসবাবপত্র ভেঙে ফেলেছে। আনসাররা আত্মরক্ষার্থে ১০ রাউন্ড ফাঁকা রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে।
তিনি আরও বলেন, উত্তেজিত শ্রমিকরা আনসারদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে অন্তত সাত-আটজন আনসার সদস্য আহত হয়েছেন।
বরিশাল মহানগর পুলিশের (বিএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মো. আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, উত্তেজিত শ্রমিকদের ওপর আনসাররা গুলি চালিয়েছে বলে শুনেছি। আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বর্তমানে ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন।
এই তিন জুতা কারখানার মালিক মিজানুর রহমান বলেন, আমরা সবাইকে বেতন দিয়ে দিয়েছি। বাইরে থেকে শ্রমিকরা এসে হামলা করেছে। আনসারদের সঙ্গে তাদের সমস্যা থেকে এই ঘটনা ঘটেছে।