আসামি ধরতে গিয়ে নারীর মাথায় পিস্তল ঠেকালেন ডিবি কর্মকর্তা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৪, ০৩:২৮ এএম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাদা পোশাকে আসামি ধরতে অভিযানের সময় এক নারীর মাথায় পিস্তল তাক করার অভিযোগ পাওয়া গেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ সময় নগদ টাকাসহ স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই নারী। গত শনিবার (১১ মে) এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সলালোচনা।
এদকিে এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি রবিবার তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মো. জয়নাল আবেদীনকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
সূত্রে জানা গেছে, মাসখানেক আগে থলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা ও সৌদিপ্রবাসী নুরুল আলম নুরুর বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় একটি মামলা হয়। সেখানে অভিযোগ করা হয়, নুরু সৌদি থেকে আরেকজনের স্বর্ণ এনে পুরোটা বুঝিয়ে দেননি। পরে মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়।
গত শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই রেজাউল করিমসহ আরও কয়েকজন নূরুল আলমকে গ্রেপ্তারের জন্য সাদা পোশাকে তার বাড়িতে যান। এ সময় নূরুল আলমের বাড়িতে তার ভাতিজার সুন্নতে খৎনার অনুষ্ঠান চলছিল।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে একদল লোক নূরুল আলমকে খুঁজতে আসে। কিন্তু নূরুলকে না পেয়ে তারা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। এ সময় বাড়িতে উপস্থিত নারীসহ অন্যদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। তারা নূরুল আলমের স্ত্রী, সন্তান, বাবাসহ পরিবারের লোকজনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। একপর্যায়ে এসআই রেজাউল প্রবাসীর স্ত্রী বন্যার কপালে প্রকাশ্যে পিস্তল তাক করেন। ঠিক তখন পুলিশের অন্য সদস্যরা ঘরে থাকা নগদ টাকাসহ স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেন।
নূরুল আলমের স্ত্রী বন্যার অভিযোগ, সাদা পোশাকে আসা লোকজন পিস্তল তাক করার পাশাপাশি গুলিও ছুঁড়েছে। তাদের কাছে গুলির খোসাও রয়েছে। তিনি বলেন, প্রবাসে আব্দুল কুদ্দুসকে ব্যবসায়িক অংশীদার না করায় তার স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ডিবি পুলিশের এসআই রেজাউল করিম বলেন, ‘বাদীপক্ষ বিষয়টি আমাদেরকে জানালে প্রথমে পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মোফাজ্জল আলী একজন কনস্টেবলকে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর আমি যাই। দূর থেকেই ওই বাড়িতে চিল্লাপাল্লা শুনছিলাম। আমি যাওয়ার পর তারা খারাপ আচরণ করে। আসামিকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। এ নিয়ে ধস্তাধস্তি হয়।’
পিস্তল তাক করেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার হাতে পিস্তল ছিল। তবে কারো দিক তাক করিনি। কাউকে মারধর করা হয়নি। আমাদের টার্গেট যেহেতু আসামি ধরা সেহেতু সে লক্ষ্যেই আমরা এগোচ্ছি। যে কারণে তখন আমরা অ্যাকশনে যাইনি।’
তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছি। যারা প্রবাসীর বাড়ি গিয়েছিল তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তদন্ত কাজ শেষ হলে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।