Logo
Logo
×

বিশ্লেষণ

পররাষ্ট্র উপদেষ্টার চীন সফর: বাংলাদেশের জন্য নতুন সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩০ এএম

পররাষ্ট্র উপদেষ্টার চীন সফর: বাংলাদেশের জন্য নতুন সম্ভাবনা

বাংলাদেশ-চীনের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও গভীর করার লক্ষ্যে সম্প্রতি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন চীনে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফর সম্পন্ন করেছেন। এই সফরে উভয় দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, কৌশলগত ও মানবিক সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। 

সম্পর্কের নবায়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি

চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)-এর আওতায় সহযোগিতার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত হয়েছে। চীনের অর্থায়নে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, অবকাঠামো উন্নয়ন, ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের পূর্বাচলে প্রথম মৈত্রী হাসপাতাল নির্মাণে চীনের বিনিয়োগের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে, যা দেশটির স্বাস্থ্যসেবা খাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে। চীনের উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে কুনমিং-এর চারটি হাসপাতাল নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

ঋণ ব্যবস্থাপনায় বড় অগ্রগতি

চীনের সাথে আলোচনার মাধ্যমে ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ২০ থেকে ৩০ বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে। যদিও সুদের হার কমানো সম্ভব হয়নি, তবে এই মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। চীনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থার (সিডকা) সঙ্গে বৈঠকে আরও প্রকল্পে সহযোগিতার কথা উঠে আসে, যার মধ্যে মোংলা বন্দর আধুনিকীকরণ ও ফোরজি সম্প্রসারণের মতো গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ রয়েছে।

রোহিঙ্গা সংকট ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা

চীনের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় একটি টেকসই রোডম্যাপ প্রস্তাব করা হয়েছে, যা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ বিষয়ে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

কূটনৈতিক সম্পর্কের গুরুত্ব

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক চীনের কূটনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই সফর কেবল অর্থনৈতিক সহযোগিতা নয়, বরং রাজনৈতিক ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও একটি ইতিবাচক মাইলফলক হয়ে থাকবে। 

ভবিষ্যতের পথচলা

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের গভীরতা ও সম্ভাবনা আরও সুসংহত হয়েছে। ভারতের প্রভাব কমে যাওয়ার পর চীনের সঙ্গে অংশীদারত্ব বাড়ানো বাংলাদেশের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। পররাষ্ট্র উপদেষ্টার এই সফর চীনের সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। 

বাংলাদেশ ও চীন একসঙ্গে কাজ করে আঞ্চলিক শান্তি ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে—এই প্রত্যাশা উভয় পক্ষের।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: banglaoutlook@gmail.com

অনুসরণ করুন