Logo
Logo
×

বিশ্লেষণ

ইসকন কী চায়

ভারতীয় গণমাধ্যম বুমলাইভের বিশ্লেষণ

Icon

স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২১ পিএম

ইসকন কী চায়

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস 'ব্রহ্মচারী' একসময় ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনসাসনেস (ইসকন)-এর একজন সন্ন্যাসী। যিনি সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন।

জাতীয় পতাকার অসম্মান করার জন্য 'রাষ্ট্রদ্রোহ' অভিযোগের গ্রেপ্তারের পরে তার ভক্তদের প্রতিবাদের মুখে পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে।  

তার ওপর পরিস্থিতি নাটকীয় মোড় নেয় গত ২৬ নভেম্বর যখন একজন চট্টগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর সাইফুল ইসলাম আলিফকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভের সময় আদালতের বাইরে হত্যা করা হয় তাকে, যা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।

এই হত্যাকাণ্ড এমন সময় হয় যখন বাংলাদেশে মুসলিম মৌলবাদী শক্তির উত্থানের আভাস পাওয়া যাচ্ছে এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দুদের বিক্ষোভ দেখছে বাংলাদেশ, যা এর আগে দেখা যায়নি।

পরবর্তী ঘটনা আরও দ্রুততার সঙ্গে গুরুতর পরিণতি নিয়ে আসে। ইসকন নিষেধাজ্ঞার দাবি ওঠে। অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান হাইকোর্টে বলেন, সরকার ইসকনকে একটি 'ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠন' বলে মনে করে। এর কার্যক্রম তদন্ত করছে সরকার।

আদালত সরকারের অবস্থানে সন্তুষ্ট হয়ে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত সরকারের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেয়।

এই ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার পেছনে ভুল তথ্য গুরুত্পূর্ণ ভূমিকা  রেছেছে। রয়টার্সসহ কিছু মিডিয়া ভুল রিপোর্ট করেছে। বলেছে, নিহত আইনজীবী চিন্ময়ের পক্ষে ছিলেন। তাই মুসলিম উগ্রবাদীরা তাকে হত্যা করেছে।

বস্তুত, নিহত আইনজীবী ছিলেন চিন্ময়ের বিপক্ষে। রাষ্ট্রের পক্ষে। 

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সেক্রেটারি সাইফুল আলম বলেন, ভারতীয় মিডিয়া ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। অন্যরাও তুলে ধরেন ভারতীয় মিডিয়া কীভাবে ভুল তথ্য ছড়ায়।

আইনজীবী আলিফের সোশ্যাল মিডিয়া 'প্রোফাইলে' দেখা যায়, তিনি আগস্ট বিপ্লবের সমর্থক ছিলেন এবং ইসকনের ভূমিকার সমালোচনা করেছিলেন।

এদিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ইসকনের সাথে যুক্ত ১৭ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে। ইসকনের নিষেধাজ্ঞার দাবিতে একাধিক সমাবেশের মধ্যে একটি ইসকন মন্দির ভাংচুর করা হয়েছিল। সে জন্য পুলিশ সম্প্রতি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ইসকনের আরও কিছু অফিস জোর করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

৩০ নভেম্বর ও ১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ ৬৩ ইসকনভক্তকে বৈধ ভিসা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে প্রবেশে বাধা দিয়েছে। 

শান্তিপ্রিয় ধর্মীয় আন্দোলন থেকে কথিত মৌলবাদী সংগঠনে পরিণত হয়েছে ইসকন, যার শাখা রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে। অর্থাৎ একটি একটি বিশ্ব হিন্দু সংগঠন।

আগস্ট অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নৃশংসতা সম্পর্কে ভুল তথ্যের বন্যা কেবল সোশ্যাল মিডিয়ায় নয়, ভারতের সংবাদ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ ও কর্মীরা এ ধরনের ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য ভারতের বিজেপি ও আওয়ামী লীগের জোটকে দায়ী করছে।

কে এই চিন্ময় কৃষ্ণ দাস

তাকে গত জুলাইয়ে ইসকন বহিষ্কার করেছিল। ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ শাসনের পতনের ঠিক পরে হিন্দু বিক্ষোভের একজন বিশিষ্ট মুখ হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিলেন চিন্ময়। তিনি হিন্দু মন্দিরে হামলার প্রতিবাদ করেন।

নভেম্বরের শুরুতে ইসকন জানায়, চিন্ময় ও তার দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগী গৌর লীলা দাস ও গৌরাঙ্গ দাসকে গত জুলাই মাসে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু 'শৃঙ্খলাগত কারণে' ছাড়া এ ধরনের বহিষ্কারের কারণ সম্পর্কে কিছু বলেনি ইসকন।

গত ২৮ নভেম্বর ঢাকাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বাংলা আউটলুক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, ইসকন প্রাথমিকভাবে শিশুদের হয়রানির অভিযোগ পাওয়ার পর ২০২৩ সালের অক্টোবরে চিন্ময়কে বহিষ্কার করে। 

চিন্ময়কে প্রাথমিকভাবে ইসকনের আন্তর্জাতিক শিশু সুরক্ষা অফিসের নির্দেশে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল এবং পরে বহিষ্কার করা হয়েছিল, কারণ তিনি তদন্তে সহযোগিতা করেননি। তিনি পুণ্ডরীক মন্দির চট্টগ্রামে অবস্থান অব্যাহত রেখেছিলেন।

ইসকন চিন্ময়কে গ্রেফতারের প্রতিবাদ করে। ২৫ নভেম্বর তার গ্রেপ্তারের পর এক বিবৃতিতে ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বলেছেন, “তার বাকস্বাধীনতার অধিকারকে সমুন্নত রাখা এবং অন্যদের এই অধিকার রক্ষায় উৎসাহিত করার জন্য তার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা অপরিহার্য। তার জন্য ন্যায়বিচার ও ন্যায্য চিকিৎসা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

আসলে কী ঘটেছিল?

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং ৫ আগস্ট ঢাকা থেকে তার প্রস্থানের ফলে বাংলাদেশ কয়েক দিনের জন্য একটি অনাচারের রাজ্যে পরিণত হয়েছিল। সে সময় জনতা হিন্দুসহ অনেক আওয়ামী নেতা ও সমর্থকদের বাড়িঘর ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। কিছু মন্দিরও হামলার শিকার হয়। তারপর থেকে হিন্দুরা বিভিন্ন ব্যানারে অসংখ্য বিক্ষোভ করেছে। হিন্দুদের জন্য নিরাপত্তা ও সমতা চেয়েছে, যারা ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুসারে দেশের জনসংখ্যার প্রায় চার শতাংশ।

সর্বশেষ আন্দোলন ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ থেকে শুরু হয়েছিল। সেখানে চিন্ময় দাস প্রধান বক্তা ছিলেন। তিনি আন্দোলন আরও বাড়ানোর ঘোষণা দেন। সমাবেশের পর বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার একটি ছবি দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়ার অগ্নিঝড়ের মতো ছড়িয়ে পড়ে যা ইসকনের পরিচয়কে নতুন রূপ দেয়। জাতীয় পতাকার উপরে জাফরান পতাকা লাগানোর অভিযোগে ২৮ অক্টোবর সিনিয়র সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান (আমার দেশ সম্পাদক) ইসকনকে একটি জঙ্গি সংগঠন এবং ভারতের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (R&AW)-এর এজেন্ট হিসেবে আখ্যায়িত করে তাকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। পরদিন বিএনপি নেতা রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও বিএনপি এই নেতার কর্মকাণ্ডকে অস্বীকার করে এবং তাকে বহিষ্কারও করে। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। 

১ নভেম্বরের একটি সমাবেশ থেকে সনাতন জাগরণ মঞ্চ (সজাম) রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা প্রত্যাহার না হলে প্রতিবাদ বাড়ানোর হুমকি দিয়েছে৷ ইসকন সাংবাদিক রহমানকে ক্ষমা চাইতে বলেছে এবং তার মন্তব্য ফিরিয়ে নিতে বলেছে। রহমান তা করেননি। বরং ইসকনের নিষেধাজ্ঞার দাবি জোরালোভাবে বাড়তে থাকে। 

মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের পথ প্রশস্তকারী ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহের অন্যতম প্রধান নেতা সারজিস আলম আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে ইসকনের হামলায় 'শহীদ' হিসাবে ঘোষণা করেছেন। 

আরেক প্রভাবশালী ছাত্রনেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। আলম, আবদুল্লাহ এবং অন্য ছাত্রনেতারা ইসকনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সহযোগিতায় "দিল্লির এজেন্ডা বাস্তবায়ন" করার অভিযোগ করেছেন। 

ইমাম খতিব উলামা পরিষদ, ইসলামী ধর্মগুরুদের একটি সংগঠন, রাজধানী ঢাকায় এক সমাবেশে ইসকনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে চিহ্নিত এবং নিষিদ্ধ করার দাবি জানায়। 

একই দাবি তুলেছে প্রভাবশালী ইসলামী সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। ৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের হাজারী লেনের একটি হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় বসবাসকারী একজন মুসলিম ব্যবসায়ী ইসকনের নিষেধাজ্ঞার দাবিতে একটি ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করার পর, তিনি হিন্দুদের একটি গ্রুপের আক্রমণের শিকার হন বলে জানা গেছে। 

পরবর্তীতে নিরাপত্তা বাহিনী ও জনতার একটি সংঘর্ষ হয়। পুলিশ এর জন্য ইসকনভক্তদের দায়ী করে, যার পরে ইমাম খতিব ওলামা পরিষদ এবং হেফাজতে ইসলামের মতো সংগঠনগুলি ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে।

১৭ নভেম্বর দুটি নবগঠিত সংগঠন, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখলঘু জোট, সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট গঠনের জন্য একীভূত হয়, চিন্ময় দাসকে যার মুখপাত্র ঘোষণা করা হয়।

তবে ইসকনের বিরুদ্ধে হিন্দু চরমপন্থা চর্চার অভিযোগ বাংলাদেশে নতুন নয়। ২০২১ সালে শুরু হয়েছিল৷ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইসকন এই ধরনের ব্র্যান্ডিংয়ের প্রতিবাদ করেছিল৷ 

বিএনপির সিনিয়র নেতা একেএম ওয়াহিদুজ্জামান বলেছেন, বাংলাদেশে ইসকনের চিত্র বৈশ্বিক চিত্র থেকে আলাদা। তার মতে, এটি পশ্চিমা বিশ্বে একটি শান্তিপ্রিয় সংগঠন হিসেবে পরিচিত কিন্তু বাংলাদেশে এটি প্রায়ই হিন্দু উগ্রবাদের সাথে যুক্ত হয়। “বিশ্বের কোথাও ইসকন ভক্তরা জয় শ্রী রাম স্লোগান তোলে না, যা হিন্দু ধর্মীয় স্লোগান নয়, বরং ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী শক্তির স্লোগান। কিন্তু বাংলাদেশে ইসকন সংগঠকরা জয় শ্রী রাম স্লোগান তোলে,” তিনি বলেছেন।

বিএনপি বাংলাদেশের দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের একটি, অন্যটি হচ্ছে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ। দেশটি বর্তমানে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে রয়েছে, যাকে ছাত্র বিদ্রোহের নেতাদের পছন্দ। সরকার সেনাবাহিনী এবং হাসিনার আ.লীগের বিরোধী অন্যান্য বাহিনীর সহযোগিতার উপর অনেকটাই নির্ভরশীল।

ইসকন বাংলাদেশে সক্রিয় একমাত্র হিন্দু সংগঠন নয়। রামকৃষ্ণ মিশন, সৎসঙ্গ এবং ভারত সেবাশ্রম সংঘের মতো সংস্থা রয়েছে। তা সত্ত্বেও, ইসকন সবচেয়ে দৃশ্যমান হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে, সারা দেশে একাধিক মন্দির স্থাপন করেছে।

“অন্যান্য হিন্দু সংগঠনগুলি তাদের মন্দির চত্বরের মধ্যেই ধর্মীয় কার্যক্রম সীমিত রাখে, কিন্তু ইসকন তাদের সংকীর্তন (গান গাইতে গাইতে নাচ এবং হরে কৃষ্ণের জপ করার সময় মিছিল) রাস্তায় নিয়ে যায়। আমি মনে করি এটিই মুসলিম মৌলবাদী শক্তিকে বিরক্ত করেছে, যারা পরিকল্পিতভাবে ইসকনকে লক্ষ্যবস্তু করেছে,” বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের একজন সংগঠক বলেছেন গণমাধ্যমকে।

 ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি এবং মুখপাত্র রাধারমন দাস পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। “এটা জঘন্য। আমরা শুধু মানবজাতির জন্য নয়, প্রাণী ও উদ্ভিদের জন্যও ভালবাসা ছড়িয়ে দিই। ইসকন বাংলাদেশ যখনই দেশে কোনো দুর্যোগ আসে তখনই ত্রাণকাজে বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়ায়,” তিনি বলেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, ২০২১ সাল থেকে ইসকন বাংলাদেশে লক্ষ্যবস্তু হতে শুরু করেছে। সেই বছর দুর্গাপূজা উৎসবের সময় হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনার পরে রাধারমন জাতিসংঘের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চিঠি লিখেছিলেন।

জাতিসংঘ পরবর্তীতে একটি বিবৃতি জারি করে এবং বাংলাদেশে একটি দল পাঠায়। ইসকন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশে বিক্ষোভের আয়োজন করে।

“যেহেতু ২০২১ সালে ইসকন বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নৃশংসতার প্রতি বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল, তাই বাংলাদেশে ধর্মীয় অসহিষ্ণু শক্তিগুলি আমাদেরকে হিন্দু প্রতিরোধের প্রতীক হিসাবে দেখে,” বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু বলেন। তার মতে, বিগত চার থেকে পাঁচ বছরে ইসকন বাংলাদেশে একটি বিশিষ্ট শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। “২০২১-২২ সময়কালে যখন ঐতিহ্যবাহী হিন্দু অধিকার সংগঠনগুলি হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনাগুলির জন্য নরমভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছিল, তখন ইসকন তাদের বিশিষ্ট রক্ষক হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল এবং বিশ্বব্যাপী নৃশংসতাকে তুলে ধরেছিল। তারা বেশ কয়েকটি মন্দিরের দায়িত্বও নিয়েছিল যেগুলি স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়গুলি পরিচালনা করা কঠিন বলে মনে করেছিল। এই সমস্ত ঘটনা বাংলাদেশে হিন্দুদের মধ্যে ইসকনের প্রভাব বাড়িয়েছে,” বসু বলেন।

বসু বলেন, ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে, ইসকন সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের হিন্দুদের সমস্যাগুলি সমাধান করেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে আলোচনার চেয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবেদনকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। “সাম্প্রতিক মাসগুলিতে বাংলাদেশে মুসলমান এবং হিন্দু উভয়ের মধ্যেই একটি লক্ষণীয় দিকে পরিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশে ইসকন কোনো না কোনোভাবে হিন্দু ডানপন্থী প্রবণতার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের অনেক সংগঠকও ইসকনের ভক্ত, যারা রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য এর সাংগঠনিক প্রভাবকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে,” তিনি বলেছিলেন।

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন